‘বন্যার পানিতে ভেসে গেল শেষ অবলম্বন’

বন্যার পানিতে ভেসে গেছে খামারের সব মাছ। ছবি: স্টার

সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের পাগলা রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা সাজেন মিয়া। তার একটি মৎস্য খামার আছে। ওই খামারের আয়েই চলে তার সংসার। খামারটিতে তার পরিবারের সবাই শ্রম দিত। তবে, এবারের বন্যায় তার খামারের সব মাছ ভেসে চলে গেছে। যে কারণে থেমে গেছে সাজেন মিয়ার আয়।

তিনি বলেন, ‘বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার সময় আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু, পানির এতটা স্রোত ছিল যে কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। সব মাছ ভেসে গেছে। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি। বন্যার পানিতে ভেসে চলে গেল আমার জীবিকার শেষ অবলম্বন।’

একই গ্রামের মোহন বিশ্বাস গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এলাকার অনেকেই মাছের ব্যবসায় সফল। তাদের সফলতা দেখে নিজের দুটি গরু বিক্রি করে ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছের খামার শুরু করেছিলাম। পুকুরে এখন কোনো মাছ নেই। সব বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কিন্তু, ঋণ এখনো শেষ হয়নি। একদম পথে বসে গেছি।’

‘বন্যায় আমাদের মতো প্রান্তিক মৎস্য চাষিরাই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব? আমাদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত’, বলেন তিনি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শুধু তারা নন, সুনামগঞ্জে আরও এক লাখ ২১ হাজার ৭৪৩ জন জেলে রয়েছেন। তাদের মধ্যে মৎস্যজীবী কার্ডপ্রাপ্ত জেলে রয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৯০ জন। তাদের সবারই একই অবস্থা। বন্যায় জেলায় ৫২৯ হেক্টর জমির পুকুর ও দীঘির মাছ ভেসে গেছে।’

‘মৎস্য খাতে মোট ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত ২৫ জুন থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের মাছ চাষিদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা সংগ্রহ করে দ্রুত পাঠানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

1h ago