১৫ জুলাই রাজশাহীতে সমাহিত হবেন এন্ড্রু কিশোর
বাংলার প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরকে আগামী ১৫ জুলাই রাজশাহীতে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন কিশোরের বোনের স্বামী ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে তার পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ১৫ জুলাই বিকেলে তাকে সমাহিত করা হবে রাজশাহী সার্কিট হাউজের সামনে চার্চ অব বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সিমেট্রিতে।
এন্ড্রু কিশোরকে সমাহিত করতে দেরী হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তার পুত্র ও কন্যা অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তারা যাতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে রাজশাহীতে পৌঁছানোর পর্যাপ্ত সময় পান সেজন্যই দেরি করা হয়েছে।’
তিনি জানান, কিশোরের ছেলে জয় এন্ড্রু সপ্তকের আজ বুধবার রাতে বাংলাদেশে এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ফ্লাইটের টিকিট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তার মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সঙ্গার ১৪ জুলাই রাতের আগে দেশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নেই।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘সব কিছু ঠিক থাকলে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে সমাহিত করা হবে।’
গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর মহিষবাথান এলাকায় বড় বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর। পরে তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।
১৫ জুলাই সকাল ৯টায় হিমঘর থেকে বের করে কফিনে করে তার মরদেহ নেওয়া হবে শহরের কাজীহাটায় রাজশাহী সিটি চার্চে। সেখানে দুঘণ্টার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে অনুমতি সাপেক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হবে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হবে রাজশাহী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে।
দুপুরের পরপরই তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানান ডা. বিশ্বাস। যে সিমেট্রিতে কিশোরকে সমাহিত করা হবে, সেখানে তার বাবা, মা ও ভাইকেও সমাহিত করা হয়েছিল। তবে কিশোরের সমাধি হচ্ছে তার পরিবারের সদস্যদের থেকে সামান্য দূরবর্তী একটি স্থানে।
ডা. বিশ্বাস বলেন, ‘খ্রিস্টানরা প্রতি বছর ১ নভেম্বর সমাধিস্থলে যায় এবং নিকটাত্মীয়দের আত্মার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে। ২০১৭ সালের এমন দিনে কিশোর আমাকে নিয়ে সিমেট্রিতে গিয়েছিল। প্রার্থনা শেষে সিমেট্রিটা ঘুরে দেখেছিল। পরে একটা মনোরম স্থান পছন্দ করে আমাকে বলেছিল যে সে যখন মারা যাবে, তখন যেন তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়। সেই জায়গাতেই তার সমাধির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে এন্ড্রু কিশোরের পরিবারের সদস্য হন। কিশোরের বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনিই পারিবারিক অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছেন।
২০ জুলাই থেকে কিশোর তার জীবনের শেষ সাত দিন ডা. বিশ্বাসের বাসভবনেই কাটিয়েছেন।
ডা. বিশ্বাস বলেন, ‘কিশোর তার একটি চাওয়াই আমাদেরকে বলেছেন। তার ইচ্ছে ছিল, তিনি রাজশাহীর সন্তান, তাকে যেন রাজশাহীতেই সমাহিত করা হয়।’
Comments