দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে ধসিয়ে দিলেন হোল্ডার
সকালের সময়টা গতিতে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার কাঁপিয়েছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। দিনের বাকিটা সময় নিজের করে নেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। দারুণ জায়গায় বল ফেলে ছোট ছোট মুভমেন্ট আদায় করে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। সাউদাম্পটন টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা তাই নিজেদের করে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে হোল্ডারর আর গ্যাব্রিয়েল মিলেই ইংল্যান্ডকে ২০৪ রানে অলআউট করে দেন। ৪২ রানে ৬ উইকেট নেন হোল্ডার, ৬২ রানে বাকি ৪ উইকেট গ্যাব্রিয়েলের। শেষ সেশনে ব্যাটিং পেয়ে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধের আগে ১ উইকেটে ৫৭ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আগের দিনের ১ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানের দৌড় এগোয়নি বেশিদূর। গ্যাব্রিয়েলের ভেতরে ঢোকা বলে স্টাম্প উড়ে যায় ডেনলির।
খানিক পর গ্যাব্রিয়েলের দারুণ ইয়র্করে পরাস্ত হন রোরি বার্নস। এলবিডব্লিওর আবেদনে মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায় ক্যারিবিয়ানরা। এদিন রিভিউতে চারবার ভুল প্রমাণিত হয়েছেন দুই ইংলিশ আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ ও রিচার্ড ক্যাটলবরো। প্রতিবারই রিভিউর ফল গেছে উইন্ডিজের পক্ষে। দ্রুত চিন্তা করে রিভিউ নিয়ে অধিনায়কত্বর মুন্সিয়ানার বাহবা পুরোটাই পেতে পারেন হোল্ডার।
হোল্ডারের প্রথম উইকেট রিভিউর ফল। জ্যাক ক্রাইলিকে ইনস্যুয়িংঙ্গারে কাবু করেছিলেন হোল্ডার। আম্পায়ার নাকচ করে দিলে এলবিডব্লিউর ফল আসে রিভিউয়ে। ওভার চারেক পরেই অলি পপকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে মিডল অর্ডারে ধস নামান হোল্ডার। এরপর জস বাটলারকে নিয়ে প্রতিরোধ অধিনায়ক বেন স্টোকসের।
৬৭ রানের জুটির পর বিপদজনক স্টোকসে ফিরিয়েও ব্রেক থ্রো আনেন হোল্ডার। ইংলিশ অধিনায়ক হোল্ডারের বল আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
বাকিটা সময় ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ সামর্থ্য ছিল অল্প। বাটলার, আর্চার , উডদের একে একে ফিরিয়ে অবিশ্বাস্য ছন্দের প্রমাণ দেন বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট অলরাউন্ডার হোল্ডার। তার লাফানো বলে বাটলার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। উডের ক্যাচে গালিতে লাফিয়ে ধরেন শেই হোপ। আর এলবিডব্লিউতে আর্চারকে ফেরাতে ওই রিভিউর দ্বারস্ত হতে হয়েছিল হোল্ডারকে। শুরুটা করেছিলেন যে গ্যাব্রিয়েল, শেষটাও মুড়ে দেন তিনি। অ্যান্ডারসনকে এসে তুলেন নিজের চর্তুথ উইকেট।
ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু ক্যারিবিয়ান ওপেনারদের। দুই ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ও জোফরা আর্চারও ছড়াতে পারছিলেন না ভীতি। বরং দুজনকেই মনে হচ্ছিল নির্বিষ।
অ্যান্ডারসন অবশ্য বারকয়েক পরাস্ত করেছিলেন ব্যাটসম্যানদের। জন ক্যাম্পেলকে দুবার আউটও করে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু দুবারই মাঠের আম্পায়ারের ভুল শুধরেছে রিভিউতে। তৃতীয়বার অবশ্য অ্যান্ডারসনের ছোবল থেকে রক্ষা পাননি বাঁহাতি ক্যাম্বেল।
এরপর বল করতে এসে ঘণ্টায় ৯৫ মাইল পর্যন্ত গতি তুলে কাঁপন ধরানোর চেষ্টায় ছিলেন মার্ক উড। কিন্তু আলোকস্বল্পতায় তার চেষ্টা থেমেছে মাঝপথে। দ্বিতীয় দিনে আর উইকেট হারায়নি ক্যারিবিয়ানরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ৩৫/১) ৬৭.৩ ওভারে ২০৪ (বার্নস ৩০, ডেনলি ১৮, ক্রলি ১০, স্টোকস ৪৩, পোপ ১২, বাটলার ৩৫, বেস ৩১*, আর্চার ০, উড ৫, অ্যান্ডারসন ১০; রোচ ০/৪১, গ্যাব্রিয়েল ৪/৬২, জোসেফ ০/৫৩, হোল্ডার ৬/৪২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ১৯.৩ ওভারে ৫৭/১ (ব্র্যাথওয়েট ২০*, ক্যাম্পবেল ২৮, হোপ ৩*; অ্যান্ডারসন ১/১৭, আর্চার ০/২০, উড ০/৮, স্টোকস ০/৬)
Comments