শিরোপা পুনরুদ্ধারের আরও কাছে রিয়াল
ম্যাচের শুরুতে লক্ষ্যভেদ করলেন করিম বেনজেমা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ালেন মার্কো আসেনসিও। বেশ কয়েকটি দারুণ সেভ করে জাল অক্ষত রাখলেন থিবো কোর্তোয়া। আলাভেসকে হারিয়ে স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধারের আরও কাছে পৌঁছে গেল শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ।
শুক্রবার রাতে ঘরের মাঠ আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে লিগ পুনরায় চালু হওয়ার পর আট ম্যাচ খেলে সবকটিতে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল তারা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই আলাভেসের রক্ষণে হানা দেয় স্বাগতিকরা। ফারলান্দ মেন্দির কাটব্যাক গোলরক্ষক রবার্তো ঠেকিয়ে দেওয়ার পর লুকাস ভাজকেজের পা ঘুরে বল পান লুকা মদ্রিচ। ডি-বক্সের সীমানা থেকে এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডারের নেওয়া শট গোলপোস্টের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
পরের মিনিটেই অবশ্য বড় বাঁচা বেঁচে যায় রিয়াল। বাঁ প্রান্ত থেকে এদগার মেন্দেজের ক্রসে দলটির সাবেক স্ট্রাইকার হোসেলুর জোরালো হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। আলগা বলে লুকাস পেরেজের ফিরতি হেড গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারান।
একাদশ মিনিটে ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমার সফল স্পট-কিকে এগিয়ে যায় রিয়াল। চলতি লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার এটি ১৮তম গোল। আলাভেসের ডি-বক্সের ভেতরে মেন্দি ফাউলের শিকার হওয়ায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
সাত মিনিট পর আত্মঘাতী গোল হজম করতে বসেছিল অতিথিরা। গোলমুখে ফরাসি ডিফেন্ডার মেন্দির বাড়ানো বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন ভিক্তর কামারাসা। ম্যাচজুড়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে সাতটি সেভ করা রবার্তো পা দিয়ে কোনোক্রমে ফিরিয়ে দেন বল।
২৬তম মিনিটে পাল্টা-আক্রমণে অলিভার বার্কের জোরালো নিচু শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া। নয় মিনিট পর ফের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেন এই স্কটিশ উইঙ্গার। ডি-বক্সের ভেতরে এদার মিলিতাও ও ভাজকজকে ফাঁকি দিয়ে তিনি কাটব্যাক করেন। কিন্তু ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হওয়া হোসেলু বল লক্ষ্যেই রাখতে পারেননি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রদ্রিগোর পাসে বেনজেমার দুর্বল শট সহজেই লুফে নেন রবার্তো। গোড়ালিতে ব্যথা পাওয়ায় রেফারি জেসুস গিল মানজানো বিরতির পর আর মাঠে নামতে পারেননি। তার বদলি হিসেবে ম্যাচ পরিচালনা করেন রদ্রিগেজ কারবাইয়ো।
৫০তম মিনিটে রিয়ালের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আসেনসিও। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোর রক্ষণচেরা পাসে অনেকটা দৌড়ে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বেনজেমা। এরপর তিনি খুঁজে নেন অরক্ষিত আসেনসিওকে। সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। শুরুতে অফসাইডের বাঁশি বাজালেও পরে ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্যে গোলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
৬১তম মিনিটে বেনজেমার পাসে রদ্রিগোর কোণাকুণি শট রুখে দেন রবার্তো। দুই মিনিট পর রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তোয়া। হোসেলুর বাঁ পায়ের জোরালো শট ফিরিয়ে দেন তিনি। মিনিটখানেক পর ঝাঁপিয়ে পড়ে মেন্দেজের শট ঠেকিয়ে আবারও ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এই বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
৭৭তম মিনিটে বেনজেমার পাসে রদ্রিগো জোরালো শট নিয়েও রবার্তোকে পরাস্ত করতে না পারায় স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ম্যাচের বাকি সময়টাতেও নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে শেষ হাসি হেসে মাঠ ছাড়ে লস ব্লাঙ্কোসরা।
এই জয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে আবারও ৪ পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করল রিয়াল। ২০১৬-১৭ মৌসুমে শেষবার লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটির অর্জন ৩৫ ম্যাচে ৮০ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ খেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সার সংগ্রহ ৭৬ পয়েন্ট। লিগের বাকি থাকা তিন ম্যাচের দুটিতে জিতলেই শিরোপা ঘরে তুলবে রিয়াল।
Comments