সুনামগঞ্জে আশ্রয়কেন্দ্রে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি নদীসহ সুরমা নদীর পানি কমা শুরু হলেও, হাওড়ের পানি কমেনি। বাড়ি থেকেও পানি না নামায়, বানভাসি মানুষেরা হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল নিয়েই অবস্থান করছে আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানে নেই রান্নার ব্যবস্থা, নেই জ্বালানি কাঠ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
আজ বুধবার সুনামগঞ্জের পুরাতন সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহিবুর রহমান।
সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা সাদেক মিয়া বলেন, ‘ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি, বাইরে কোমর পানি। তাই বাড়িতে যেতে পারছি না। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জায়গা ছাড়া আর কিছুই দেওয়া হচ্ছে না।’
আশ্রয়কেন্দ্রে গরু-ছাগল নিয়ে একসঙ্গেই থাকছি, বলেন তিনি।
সুনামগঞ্জ সদরের বড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে স্বামী, দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে অবস্থান করছেন সুজানা বেগম। তিনি বলেন, আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রের নিচতলা ডুবে গেছে। জায়গা না পেয়ে তিনটি পরিবার নিচেই বেঞ্চের ওপর থাকছে।
তিনি বলেন, বানের পানিতে ভেসে যাওয়া জিনিসপত্রগুলো আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন তার স্বামী। বিছানা-পত্র, কাপড়চোপড় সব ভিজে গেছে। মজুদকৃত সব খাবার বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কোন খাবার নিয়ে আসতে পারেননি। অন্যদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে খাওয়া দাওয়ার জন্য রান্নার ব্যবস্থা নেই। তাই শুকনো খাবার খেয়ে আছেন।
সুজানা বেগমের সঙ্গে যারা থাকছেন তারা জানান, সরকারিভাবে কোন ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আর স্রোত বেশি থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
এবার বন্যায় ত্রাণ সহায়তাও অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৩৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বানভাসি মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। ৪০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নগদ ১২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারও বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
Comments