রত্নাই নদীতে অসম্পূর্ণ সেতু

সেতু নির্মাণে ৫ দফা সময় পার, ভোগান্তিতে লালমনিরহাটের ১০ গ্রামের মানুষ

নির্মাণ শুরুর পর প্রায় চার বছর হতে চললেও এখনও শেষ হয়নি লালমনিরহাট সদর উপজেলার রত্নাই নদীর ওপর সেতুর কাজ। কাজ শেষ করতে এরইমধ্যে পাঁচ দফা সময়সীমা শেষ হয়েছে। অসম্পূর্ণ এই সেতু নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন মোগলহাট ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ।
কাজ শেষ করতে ৫ দফা সময়সীমা শেষ হলেও লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্নপুর গ্রামে রত্নাই নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ এখনও অসম্পূর্ণ। ছবি: এস দিলীপ রায়

নির্মাণ শুরুর পর প্রায় চার বছর হতে চললেও এখনও শেষ হয়নি লালমনিরহাট সদর উপজেলার রত্নাই নদীর ওপর সেতুর কাজ। কাজ শেষ করতে এরইমধ্যে পাঁচ দফা সময়সীমা শেষ হয়েছে। অসম্পূর্ণ এই সেতু নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন মোগলহাট ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ। 

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন ১২০ মিটার দীর্ঘ ও ৮ মিটার প্রশস্ত সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। 

নির্মাণ শেষ করতে ২০১৮ সালের মে ও নভেম্বর, ২০১৯ সালের মে ও নভেম্বর এবং ২০২০ সালের মে মাসের সময়সীমাও পার করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজ হয়েছে ৬৫-৭০ শতাংশ।

এলজিইডি’র লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রকৌশলী শাহ ওবায়দুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পাঁচটি সময়সীমা পার করেছেন। সুরমা ও আবু বক্কর নামে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ৬.২ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের কাজ পায়।’

সেতুটি নির্মাণে দেরির বিষয়ে জেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

সেতুটি নির্মাণ অসম্পূর্ণ থাকায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বর্ষার সময় রত্নাই নদী পার হতে হয় নৌকায়। 

কর্ণপুর গ্রামের কৃষক হেমন্ত চন্দ্র বর্মন (৬২) জানান, সেতুটির নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় তাদেরকে জেলা সদরে যাওয়ার জন্য নৌকা দিয়ে রত্নাই নদী পাড়ি দিতে প্রত্যেকবার ১০ টাকা করে খরচ করতে হয়। এতে তাদের টাকা ও সময় দুটোই যাচ্ছে। ‘সেতুটি সম্পূর্ণ না হওয়ায় আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুর কাজ কবে শেষ হবে আর আমাদের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত হবে আমরা তাও জানি না,’ বলেন তিনি। 

নির্মাণাধীন সেতুর পাশে মেঘারাম গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা রহিম মিয়া (৪৮) অভিযোগ করে বলেন, যদিও ঠিকাদার সেতুটির নির্মাণকাজে দেরি করছেন কিন্তু এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তিনি আরও যোগ করেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও বিকল্প পদক্ষেপ না নিলে নির্মাণকাজ আরও দেরি হবে এবং আমরা দুর্ভোগ পোহাতেই থাকবো।’

সেতুটির নির্মাণ ঠিকাদার গোলাম রাব্বানী’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নদীতে পাইলিংয়ের কাজ চলাকালীন তাদেরকে জটিল সমস্যায় পড়তে হয়েছিল আর সে কারনে নির্মাণ কাজটি বিলম্ব হয়েছে। চলতি বছর ২০২০’র নভেম্বরের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করা হবে বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তারা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নোটিশ দিয়েছেন। নোটিশে উল্লেখ করেছেন ঠিকাদার চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে ব্যর্থ হলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। ‘যদি রত্নাই নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুটি এই বছরের নভেম্বরের মধ্যে শেষ না হয়, তবে আমরা বিকল্প পদক্ষেপ নেব,’ তিনি এমনটি জানিয়ে বলেন অবশ্যই এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago