মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের কথা বলে পঞ্চগড়ে তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের কথা বলে নিয়ে এসে ২৮ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বোদা থানায় গতকাল বুধবার রাতে একটি মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত প্রধান দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোদা পৌরসভার থানা পাড়ার বাসিন্দা আবিদা সুলতানা ওরফে লাকী (৪৬) এবং একই পৌরসভার ঝিনুক পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে ও প্রথম বাংলা আইপি টিভির চিফ নিউজ এডিটর হিসেবে পরিচয়দানকারী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে মিলন (৩৩)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল হাসানের আদালতে হাজির করা হলে তিনি আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তার জবানবন্দী একই আদালতে রেকর্ড করা হয়।
এজাহার অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সায়েম মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী পাবনা জেলার বাসিন্দা। তিনি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এলাকায় থাকতেন এবং ইউটিউবের জন্য তৈরি করা বিভিন্ন শর্ট ফিল্ম ও মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবে কাজ করতেন।’
‘বোদা পৌরসভার সাজ্জাদ হোসেন ওরফে মিলনের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে ওই তরুণীর পরিচয় হয় ঢাকায়। সে সময় মিলন একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলে চিফ নিউজ এডিটর ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন বলে পরিচয় দেন। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সাজ্জাদ হোসেন বাড়িতে চলে আসার পর নিজ এলাকায় মিউজিক ভিডিও তৈরির কথা বলে মুঠোফোনে ওই তরুণীকে বোদায় আসতে বলেন।’
‘সে অনুযায়ী গত ১৪ জুলাই সকালে ওই তরুণী বোদায় পৌঁছালে সাজ্জাদ হোসেন তাকে বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা ওরফে লাকীর বাসায় নিয়ে যান। পরে সাজ্জাদসহ চার থেকে পাঁচ জন তাকে ধর্ষণ করে। পরদিন একই পৌর এলাকার ভাসাই নগরে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেখানেও কয়েকজন মিলে তাকে গণধর্ষণ করে।’
‘এক পর্যায়ে বুধবার রাতে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে বাবাকে ফোন করেন ওই তরুণী। বাবার পরামর্শে তিনি বোদা থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন এবং পুলিশকে ঘটনা খুলে বলেন। পরে ওই রাতেই সাজ্জাদ, আবিদা সুলতানা ও বোদা নগরকুমারী এলাকার বাসিন্দা জসীম উদ্দিনের (২২) নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামী করে বোদা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী।’
বুধবার রাতেই অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে মিলন ও আবিদা সুলতানা ওরফে লাকীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানান তিনি।
মামলার অন্য আসামীদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে জানিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অভিভাবক আসলেই তাদের কাছে ওই তরুণীকে হস্তান্তর করা হবে।’
Comments