থাইল্যান্ড থেকে সিকদার গ্রুপের দুই ভাইয়ের আগাম জামিন আবেদন

‘যেখানে আসামিরা দেশে নেই, তাদের তো আবেদন করতে পারার কথা না’
সিকদার গ্রুপের এমডি রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে

ঋণের জন্য এক্সিম ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে অপহরণ, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় ভার্চুয়াল হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেছেন সিকদার গ্রুপের এমডি রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদার। বর্তমানে তারা দুই জনই থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার এক নম্বরে এই জামিন আবেদনের শুনানি রয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আবেদনে দেশে আসলে যাতে পুলিশ গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করে, এই নির্দেশনা চেয়ে অনুরোধ করেছেন তারা।’

বশির আহমেদ বলেন, ‘ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে আগাম জামিন আবেদনের কোনো বিধান নেই। এ ছাড়া, হাইকোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও দেশের বাইরে থেকে কোনো আসামি মামলায় আগাম জামিন চাইতে পারেন না। যেহেতু রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার দেশ ছেড়ে গেছেন, তাই তারা বর্তমানে পলাতক বলে বিবেচিত। কোনো পলাতক আসামিও তো আগাম জামিন চাইতে পারেন না।’

তিনি জানান, গত ২ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুনের মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন করেন রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার। ইমেইলের মাধ্যমে হাইকোর্টে আবেদনটি করা হয়।

‘মামলায় আগাম জামিন আবেদনের ভার্চুয়াল শুনানিতে আসামি পক্ষে থাকবেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। তিনিও বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন’, বলেন বশির আহমেদ।

যোগাযোগ করলে আইনজীবী মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন বলেন, ‘রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার যেহেতু বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন, তাই তারা ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি আগাম জামিন আবেদন না করেন, তাহলে তো তারা পলাতক আসামি বলে গণ্য হবে। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

যদি হাইকোর্ট চান, তাহলে শুনানিকালে রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখানে ব্যাপার হচ্ছে, যেখানে আসামিরা দেশে নেই, তাদের তো আবেদন করতে পারার কথা না। এর জন্য আসামিদের দেশে থাকতে হবে। আসামি যদি দেশের বাইরে বিচারযোগ্য কোনো অপরাধ করে থাকেন, সেক্ষেত্রে হয়তো দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা যাবে। এটা ১৮৮ ধারার আওতায় রয়েছে। তবে, সেক্ষেত্রেও কতগুলো প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে, যখন আগাম জামিনের ব্যাপারটি আসে, তখন আসামির সশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয় আছে। আসামিকে দেখে তারপর জামিন দেওয়ার ব্যাপারটি আসে। এ কারণে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো কোনো কোর্ট আগাম জামিনের একটিও আবেদন নেননি।’

‘এখন এক্ষেত্রে যদি আসামি দেশে থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকেন, সেইটুকু না হয় আদালত অনুমতি দিতে পারেন। কিন্তু, এই মামলার আসামিরা তো দেশেই নেই এবং এটা তো সবারই জানা। এক্ষেত্রে তো জুরিসডিকশনের প্রশ্ন আসে। দেশের বাইরে তো জুরিসডিকশন নেই। তাই এই পুরো ব্যাপারটিই আইনি প্রক্রিয়া না মেনে করা হয়েছে বলে আইনজীবী হিসেবে আমাদের সন্দেহ’, যোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মে এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে। আর গত ২৫ মে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তারা দেশ ছাড়েন।

আরও পড়ুন:

২৫ মে ব্যক্তিগত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ‘দেশ ছেড়েছেন দুই ভাই’

সিকদার গ্রুপের এমডি’র গাড়ি জব্দ

রন হক সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট: ন্যাশনাল ব্যাংক

সিকদার গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে মামলা

Comments

The Daily Star  | English

Iran launches fresh wave of attacks on Israel: state TV

"New round of Honest Promise 3 attacks," state television reported, referring to the name of the Iranian military operation against Israel

26m ago