লালমনিরহাটে তৃতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/lalmonirhat-teesta-water.jpg?itok=W1bjNCGo×tamp=1595310031)
তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করায় লালমনিরহাটে তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানিতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি অব্যাহত থাকলে তিস্তা নদীতে পানি আরও বাড়বে। আর এতে করে আবারও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।’
তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তাপাড়ে আবারও বন্যার আশঙ্কায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষ। জুন মাসে প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জুলাইয়ে দ্বিতীয় দফা বন্যার মুখে পড়েন তারা। আর দ্বিতীয় দফা বন্যার ধকল এখনো কাটিয়ে না উঠতেই তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা তাদেরকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরের অনেক মানুষ আজ সকাল থেকে আবারও বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদে ছুটতে শুরু করেছেন।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার চর গড্ডিমারী এলাকার কৃষক নজের আলী (৬৫) বলেন, ‘প্রথম দফা, দ্বিতীয় দফা বন্যার দুর্ভোগ এখনো শেষ হয়নি। তার ওপর তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে হুহু করে। তৃতীয় দফা বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছি। তিন দিন আগে কেবল বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমেছে। এখনো ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-দরজা ঠিক করতে পারিনি। তৃতীয় দফা বন্যার কবলে পড়লে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ব।’
আদিতমারী উপজেলার তিস্তার চর নরসিংহের কৃষক সবেদ মিয়া (৬০) বলেন, ‘দুই দফা বন্যায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেই ধাক্কা তো এখনো সামলে উঠতে পারিনি। আজ ভোর থেকে আবারও তিস্তার পানি বাড়ছে। আমাদের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। মনে হচ্ছে আবারও নিরাপদ আশ্রয় সরকারি রাস্তা ও বাঁধের দিকে ছুটতে হবে। দফায় দফায় বন্যার কবলে জীবন নাজেহাল হয়ে উঠছে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিস্তায় পানি বাড়লে চর ও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলো প্লাবিত হয়, আর বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি ওঠে। এতে নদীপাড়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে তৃতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
Comments