‘দল আমার কাছে যা চাইবে, তা আনতে সর্বস্ব উজাড় করে দেব ’
অবিশ্বাস্য দক্ষতা, অতুলনীয় সাহস, শতভাগ নিবেদন। ম্যানচেস্টার টেস্টে বেন স্টোকস যা করেছেন তাতে এতসব বিশেষণও একটুও বাড়াবাড়ি হবে না। স্থিতধী থেকে বড় ইনিংস খেলে দলকে শক্ত পূঁজি পাইয়ে দেওয়া, আবার দ্রুত রান আনার চাহিদায় সামনে থেকে নেতৃত্ব। ভীষণ দরকারি সময়ে বল হাতে ব্রেক থ্রো। একজন স্টোকস ছিলেন বলেই না পুরো একদিন ভেসে যাওয়ার পরও দুর্দান্ত জয়ে সিরিজে ফিরল ইংল্যান্ড। ম্যাচ জিতিয়ে এই অলরাউন্ডার বলছেন, দলের যেকোনো চাহিদা মেটাতেই তৈরি থাকেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ১৭৬ রান, বোলিংয়ে ২৯ রানে ১ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেন করতে নেমে ৫৭ বলে ৭৮। পরে বোলিংয়ে জারমেইন ব্ল্যাকউড আর আলজেরি জোসেফের উইকেট নিয়ে ম্যাচ জেতানোর পথ করে দেওয়া। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ইংল্যান্ড তাই জিতেছে ১১৯ রানে। তিন ম্যাচ সিরিজে পিছিয়ে গিয়ে এনেছে সমতা।
প্রথম ইনিংসে নিজের নিয়মিত ব্যাটিং পজিশনে নেমে খেলেছেন ১৭৬ রানের ইনিংস। ১৭ চার, ২ ছক্কায় ৪৮৭ বলের ইনিংসে ছিল না তাড়াহুড়ো। স্ট্রাইকরেট রেখেছেন ৫০ এর নিচে।
অথচ পরের ইনিংসে যখন দ্রুত রান এনে ইনিংস ঘোষণা করতে হবে, পুরো ভিন্ন মেজাজে স্টোকস। ভূমিকা বলদে তাকে পাঠানো হয় ওপেনিংয়ে। সানন্দে সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে ৫৭ বলে করেছেন ৭৮ রান। এবার স্ট্রাইকরেট- ১৩৬.৮৪!
ম্যাচ সেরা হয়ে স্টোকস জানান, দলের ডাকে যেকোনো ভূমিকা নিতেই তৈরি থাকেন তিনি, ‘অবশ্যই, আমার কাছে যাই চাওয়া হয়, দলের জন্য সবটা দিতে আমি মুখিয়ে থাকি।’
দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ৪ বল করার পরই চোটে পড়েছিলেন। তারপর বিরতি নিয়েছেন। ফিরে এসে লম্বা স্পেলে বল করেছেন। দলকে এনে দিয়েছেন ভীষণ জরুরী উইকেট। শারমাহ ব্রোকস আর জারমেইন ব্ল্যাকউডের জুটিতে এসে গেছে শতরান। ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভাবনা তখন উজ্জ্বল হচ্ছে ক্যারিবিয়ানদের।
স্টোকস এসে ব্ল্যাকউডকে ফিরিয়ে পাইয়ে দেন মহামূল্যবান উইকেট, সুনির্দিষ্ট কৌশল আর পরিকল্পনায় স্থির থাকাকেই দিলেন এক্ষেত্রে কৃতিত্ব, ‘কেবল উইকেট এনে দেওয়ার ব্যাপারই নয়। চাপ তৈরি করে রাখাও দরকার ছিল। আমরা জানতাম ব্যাটসম্যানদের আসলে কোথাও পৌঁছাবার উপায় নেই। আগ্রাসী ফিল্ডিং সাজিয়ে আমরা সেই কাজটাই করছিলাম।
দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের ওপেন করতে নামাকেও ম্যাচের একটা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন স্টোকস, ‘জো (রুট) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খুবই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ছিল তা। আমাদের পক্ষে ফল আনতে যা খুবই কার্যকর হয়েছে। জো সত্যিই দারুণ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাকে আর জসকে (বাটলার) উপরে পাঠিয়ে।’
স্টোকসের নৈপুণ্যে কোন প্রশংসাই যেন যথেষ্ট মনে হচ্ছে না ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুটের, ‘আমি বলব সে হচ্ছে মি. ইনক্রেডিবল। এই মানের পারফরম্যান্স নিয়মিত করার সামর্থ্য আছে ওর। আসলে ওর যা সামর্থ্য তা কেবল আকাশ স্পর্শ করতে পারে। ও যেভাবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এমনটা নিয়মিত করতে না পারার কারণ নেই।’
Comments