জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছি মঞ্চে অভিনয় করে: আবুল হায়াত

গুণী অভিনেতা আবুল হায়াত এখনো অভিনয়ে সরব। অভিনয়, নাটক পরিচালনা, নাটক লেখা— তিনটি কাজেই তার পদচারণা। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছেন অফুরন্ত ভালোবাসা। অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন মঞ্চ দিয়ে।
abul hayat
অভিনেতা আবুল হায়াত। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

গুণী অভিনেতা আবুল হায়াত এখনো অভিনয়ে সরব। অভিনয়, নাটক পরিচালনা, নাটক লেখা— তিনটি কাজেই তার পদচারণা। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছেন অফুরন্ত ভালোবাসা। অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন মঞ্চ দিয়ে।

তার অভিনীত অসংখ্য টিভি নাটক রয়েছে। চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সব শেষ ‘ফাগুন হাওয়ায়’ সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। জনপ্রিয় এই শিল্পীর সাড়া জাগানো নাটক ‘বহুব্রীহি’ আবারও বিটিভিতে প্রচার শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি তিনি একটি নাটকে শুটিং করেছেন। করোনাকালের দিনগুলো নিয়ে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারে’র সঙ্গে।

করোনা পরিস্থিতিতে কিভাবে কাটছে আপনার দিনগুলো?

আবুল হায়াত: বেশিরভাগ সময় কাটছে পড়ালেখা করে। প্রচুর পড়ছি। এমনিতেও আমি পড়ি। এখন একটু বেশিই পড়াছি। সৈয়দ শামসুল হক এর ‘তিন পয়সার জোছনা’ পড়ছি এখন। নাটক-সিনেমা দেখি, লেখালেখি করি। নতুন একটি মঞ্চ নাটক লিখছি। একটি উপন্যাসও লিখছি।

বাসায় ব্যায়াম করার ব্যবস্থা আছে। ব্যায়ামও করি। আসলে ভাগ করে নিয়ে সময়টা পার করছি। ‘বহুব্রীহি’র পুনঃপ্রচার শুরু হয়েছে, সেটাও দেখলাম।

কোনো ধরনের অস্থিরতা কাজ করে কি?

আবুল হায়াত: তা তো অবশ্যই করে। অপ্রয়োজনেও মানুষ বাইরে চলাচল করছে— এসব সংবাদ যখন দেখি তখন এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে। আমার কথা হচ্ছে, বাইরে বের হলে মাস্কটা অন্তত পরুন। শতভাগ সচেতন হয়ে বাইরে যান। নিজে বাঁচুন এবং অন্যকে বাঁচতে দিন। তাহলে সবাই মিলে বাঁচতে পারব।

‘বহুব্রীহি’ নতুন করে বিটিভি প্রচার শুরু করেছে, এই নাটকের শুটিং কোথায় করেছিলেন?

আবুল হায়াত: তার আগে বলে নিই, ‘বহুব্রীহি’ নাটকটিতে অভিনয় করার সময় ভীষণভাবে এনজয় করে কাজটি করেছিলাম। অসাধারণ একটি গল্প। আমরা শুটিং করেছিলাম গাজীপুরের একটি গ্রামে। সাভারেও শুটিং করেছি। কী সুন্দর দিন তখন কেটেছিল। অমন দিন আর আসবে না!

‘বহুব্রীহি’ নাটকে আপনি পরিবারের প্রধান কর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা অসম্ভব রাগী একটি চরিত্র। বাস্তবে আপনি কতটা রাগী?

আবুল হায়াত: ঠিকই বলেছেন। নাটকের সব পাত্রপাত্রীরা আমার ভয়ে চুপচাপ থাকত। এত রাগী চরিত্রে আর কোনো নাটকে অভিনয় করেছি বলে মনে পড়ে না। হুমায়ূন আহমেদ দারুণভাবে চরিত্রটি লিখেছিলেন। আমি চেষ্টা করেছিলাম তা ফুটিয়ে তুলতে। সে সময়ে অনেকেই জানতে চাইতেন— এত রাগী চরিত্র কেমন করে করছি? এ জীবনে অভিনয়টাই করেছি। সেই চেষ্টাটা ছিল। বাস্তব জীবনে আমি রাগী মানুষ নই।

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অভিনয় করছেন, কতটা ভালোবাসা ও আনন্দ নিয়ে এই কাজটি করছেন?

আবুল হায়াত: অভিনয়কে যতটা ভালোবেসেছি, সেটা আর কিছুতে তো করিনি। শতভাগ দরদ, শতভাগ ভালোবাসা, শতভাগ আনন্দ নিয়ে কাজটি করছি বলেই এখনো করতে পারছি। তখন নাটক করেছি প্যাশন থেকে। পেশা থেকে নয়। মূল শুটিং করার আগে আমরা রিহার্সল করতাম। অনেকবার রিডিং হত। সবাই মিলে কয়েকবার বসা হত। তারপরই আমরা মূল শুটিং করতাম। অনেক যত্ন করে কাজটি করা হত।

সম্প্রতি কোন সিনেমাটি দেখেছেন?

আবুল হায়াত: সম্প্রতি ‘বেলাশেষে’ সিনেমাটি দেখলাম। এটি আগেও দেখেছিলাম। নতুন করে দেখলাম। সুন্দর সিনেমা। ‘সোনার পাহাড়’ সিনেমাটিও দেখলাম। মন ভালো করার জন্য যা যা দেখতে মন চায় সে সব সিনেমা দেখছি।

অভিনয় জীবনের শুরুটা করেছিলেন মঞ্চ দিয়ে, সে বিষয়ে কিছু জানতে চাই।

আবুল হায়াত: সেটা তো বহু বছর আগে। জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়গুলো কাটিয়েছি মঞ্চে অভিনয় করে। মঞ্চ নাটকে অভিনয় অন্যরকম আনন্দ দেয় একজন শিল্পীকে। তা ভুলবার নয়। সবশেষ মঞ্চে অভিনয় করেছি দুই বছর আগে। ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকে।

করোনাকালেও তো একটি নাটকে অভিনয় করেছেন?

আবুল হায়াত: চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় একটি এক ঘণ্টার নাটকে অভিনয় করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা কাজটি করেছি। তবে, খুব বেশি কাজ করার ইচ্ছে নেই।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago