সেলফ-আইসোলেশনে থাকাকালেও বর্ণবাদী আচরণের শিকার আর্চার
বায়োসিকিউরিটি প্রোটোকল ভেঙে দল থেকে বাদ পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জোফরা আর্চার। ২৫ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কাছে জাতিগত বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিস্তারিত জানিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান করেছেন।
বুধবার ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইলে নিজের কলামে বিশ্বকাপজয়ী তারকা আর্চার লিখেছেন, ‘ইনস্টাগ্রামে আমি গেল কয়েক দিনে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছি এবং আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যথেষ্ট সহ্য করেছি, আর নয়। যেহেতু ক্রিস্টাল প্যালেসের ফুটবলার উইলফ্রেড জাহা অনলাইনে এক ১২ বছর বয়সীর কাছে বর্ণবাদের শিকার হয়েছে, তাই আমি একটি সীমারেখা টেনেছি এবং কোনোকিছুকে এই সীমা পার হতে দিব না। আমি ইসিবির কাছে অভিযোগ করেছি এবং এখন তা যথাযথ প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাবে।’
সাউথ্যাম্পটনে প্রথম টেস্ট খেলে দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু ম্যানচেস্টার যাওয়ার পথে হোভে নিজের বাড়িতে থেমেছিলেন আর্চার। বায়োসিকিউরিটি প্রোটোকল অমান্য করে সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। তাই গেল বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের ইংল্যান্ড দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয় তাকে। ওইদিন থেকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হোটেলে নিজের কক্ষে পাঁচ দিন সেলফ-আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। তবে দুই দফা কোভিড-১৯ পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ আসায় ইতোমধ্যে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাকে।
এই ঘটনায় তাকে ঘিরে যে বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়েছে তাতে অস্বস্তি বোধ করার পাশাপাশি ভুল শুধরে মাঠে ফেরার অনুপ্রেরণা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন আর্চার, ‘এই পরিস্থিতিতে নেটে বোলিংয়ে ফেরার সময় খেয়াল করেছি যে কোনো অনুপ্রেরণা পাচ্ছি না। কোভিড-১৯ প্রটোকল ভেঙে সেলফ-আইসোলেশনের থাকার মেয়াদ শেষ করে প্রথমবার নিজের কক্ষের বাইরে পা রাখার পর প্রতিটি পদক্ষেপে ক্যামেরার ক্লিকের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। পুরো বিষয়টা আমাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। আমি জানি যে ভুল করে ফেলেছিলাম এবং এর পরিণতিও ভোগ করেছি। আমি কোনো অপরাধ করিনি এবং নিজেকে আবারও (আগের মতো) অনুভব করা শুরু করতে চাই।’
সতীর্থ তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের সঙ্গে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান খুঁজে বের করার প্রচেষ্টাও করেছেন তিনি, ‘কেমন অনুভব করছি তা নিয়ে গেল সোমবার চিকিৎসকের পাশাপাশি বেন স্টোকসের সঙ্গেও সংক্ষিপ্তভাবে কথা বলেছি আমি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাদপ্রদীপের আলোয় থাকাটা কীভাবে সামলাতে হবে তা সম্পর্কে বেন আমাকে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমার পাশে থাকার এবং আমাকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে। এখন আমাকে মানসিকভাবে শতভাগ ঠিক হতে হবে যেন আমি এই সপ্তাহে ক্রিকেটে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারি।’
বার্বাডোজে জন্ম নেওয়া আর্চার আগেও বেশ কয়েকবার বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন। গেল বছর নভেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় গ্যালারিতে উপস্থিত এক দর্শকের কাছ থেকে বর্ণবাদী মন্তব্য শুনেছিলেন তিনি। এরপর গেল মার্চে তাকে পাঠানো হয়েছিল বর্ণবাদী বার্তা।
Comments