লালমনিরহাটে তৃতীয় দফায় বন্যা

তিস্তা ও ধরলাপাড়ের প্রায় ৯০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

উজানে ভারত থেকে আসা পানিতে লালমনিরহাটে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলাপাড়ের ১৫টি ইউনিয়নের ৯০ গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
ছবি: এস দিলীপ রায়, লালমনিরহাট

উজানে ভারত থেকে আসা পানিতে লালমনিরহাটে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলাপাড়ের ১৫টি ইউনিয়নের ৯০ গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।

আজ বুধবার লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলা নদী বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ও তিস্তা নদীর পানি হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত থাকায় জেলার প্রধান দুই নদী তিস্তা ও ধরলাসহ ১০টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা মোগলহাট ইউনিয়নের ধরলা নদীর তীরবর্তী চর ফলিমারী এলাকার বানভাসি জামিনা বেগম (৬০) বলেন, ‘ধরলা নদীর পানি আকস্মিক বৃদ্ধি পেয়ে বাড়িতে এক গলা পানি উঠেছে। পানির স্রোতে তিনটি ঘরের মধ্যে একটি ঘর ভেসে গেছে। দুটি ঘর কোন রকমে রক্ষা করে নৌকায় নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে কিছু হাঁস-মুরগী।’

একই চরের বানভাসি রাশেদা বেগম (৪২) জানান, তারা আবারো বন্যার কবলে পড়েছেন। ঘর-বাড়ি ছেড়ে স্থানীয় একটি বাজারে উঠেছেন। চর ফলিমারী এলাকায় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বন্যায় তাদের অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। ঘরের জিনিসপত্র, গরু-ছাগল কোনরকমে নিয়ে এসেছেন কিন্তু ঘরগুলো ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, ধরলা নদীর পানি প্রবল স্রোতে বইছে।

চর ফলিমারীর বানভাসি চান্টু মিয়া (৪৮) জানান, তাদের এখানে কোনো সরকারি রাস্তা নেই, পানি উন্নয়নের বাঁধ ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রও নেই। আছে শুধু একটি উঁচু একটি বাজার। বাজারে বানভাসিরা আশ্রয় নিলেও সেখানেও সন্ধ্যার পর পানি উঠতে শুরু করেছে। রাতের বেলা ফলিমারী চরের পানিবন্দি মানুষের কী অবস্থা হবে শুধু আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম ভুট্টু বলেন, ‘চর ফলিমারী এলাকায় তিনশ পরিবার বাস করে। আজ বিকেল থেকে সবগুলো বাড়িতে কোমর থেকে গলা পর্যন্ত বন্যার পানি উঠেছে। নৌকা দিয়ে পানিবন্দি কিছু মানুষকে নিরাপদে আনা গেলেও এখনো অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Prof Muhammad Yunus on Bangladesh India relations

Dhaka-Delhi ties should be based on equity: Prof Yunus

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus today said they need to maintain good relations with India but that should be based on equity and fairness

2h ago