লালমনিরহাটে গৃহবধূ হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ৪
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দিপালী দেব সিংহ নামে এক গৃহবধূ হত্যায় জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যার আগে অপহরণ ও পরে মরদেহ গুম করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দিপালী দেব সিংহ নিখোঁজ হওয়ার পরে তার ফোন কল ট্রেস করে সন্দেহভাজন আসামিদের চিহ্নিত করা হয়। গতকাল রাতে উপজেলার টংভাঙ্গা ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছেন।’
দিপালী ওই গ্রামের ব্যবসায়ী পরিমল দেব সিংহের স্ত্রী। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন— টংভাঙ্গা গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে রমজান আলী, ওই গ্রামের ধনর উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম এবং উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম হলদিবাড়ী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ওসমান আলী ও তার স্ত্রী রাশেদা বেগম।
গত ৯ জুলাই রাতে দিপালী নিখোঁজ হন। পরদিন পরিমল হাতীবান্ধা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পুলিশ জানায়, দিপালী নগদ তিন লাখ টাকা ও আড়াই লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিতে আসমিরা প্রতারণার জাল ফেলে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনে রাকিব নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দিপালীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। রাকিব দিপালীকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলে। রমজান ও নজরুল দিপালীকে ওসমানের বাড়িতে নিয়ে যায়। রাকিবের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তারা দিপালীকে তিস্তার চরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে মরদেহ গুম করতে বালুচাপা দেয়। এরপর টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।
চার জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পরে গতকাল রাতে পরিমল হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আসামিরা পূর্ব পরকিল্পনা অনুযায়ী আমার স্ত্রীকে অপহরণ করে। তার কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নিতে তাকে হত্যা করে এবং লাশ গুম করে দেয়। দিপালীর লাশ এখনো উদ্ধার হয়নি। যেখানে বালুচাপা দেওয়া হয়েছে সেখানে এখন শুধু পানি আর পানি।’
ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকায় তিস্তা নদীতে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, সেটা দিপালীর মরদেহ। আমরা ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়েছি কিন্তু মরদেহ পাওয়া যায়নি। তিস্তার পানিতে মরদেহ ভেসে গেছে। পুলিশ রাকিবকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে।’
Comments