চীনের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সিঙ্গাপুরের নাগরিকের গুপ্তচরবৃত্তি

চীনের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তচরবৃত্তির কথা স্বীকার করেছেন সিঙ্গাপুরের নাগরিক জুন ওয়ে ইয়েও। তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব রাজনৈতিক পরামর্শ কেন্দ্র থেকে চীনের গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য সরবরাহের অভিযোগ আনেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

মার্কিন বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, শুক্রবার জুন ওয়েই, যিনি ডিকসন ইয়েও নামেও পরিচিত, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চীনা সরকারের একজন গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরামর্শক পরিচয় ব্যবহার করে চীনা গোয়েন্দা সংস্থার জন্য তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ করা হয়।

জবানবন্দিতে তিনি ভুয়া পরামর্শ কেন্দ্র খুলে চাকরির ব্যবস্থা করার কথা জানান। চীনা সরকারের প্রতি আগ্রহী আমেরিকানদের প্ররোচিত করতেন তিনি। তাদের ভুয়া ক্লায়েন্টদের জন্য রিপোর্ট লেখার কথাও স্বীকার করেছেন জুন ওয়েই।

আদালতের নথি অনুসারে তাকে ২০১৫ সালে চীনা গোয়েন্দা সংস্থা নিয়োগ দেয়। সে সময় তিনি সিঙ্গাপুরের একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র ছিলেন।

জবানবন্দি অনুসারে, জুন ওয়েই সংবেদনশীল তথ্যে অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য সম্ভাবনাময় ব্যক্তি নিয়োগ দেওয়ার জন্য একটি পেশাদার নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট- ধারণা করা হচ্ছে লিংকডইন ব্যবহার করতেন।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়েছিল।

এদিকে, গত শুক্রবার চীনের এক গবেষককে আটকের কথা জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

বিবিসি জানায়, আটককৃত গবেষকের নাম জুয়ান তাং। চলতি সপ্তাহে যে চার চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছিল জুয়ান তাদের মধ্যে অন্যতম। বাকি তিন জনকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়।

চেংদুতে মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ

গতকাল শুক্রবার চীনের চেংদুতে মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেয় বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে চীনা কনস্যুলেট বন্ধের পাল্টা জবাবে এই নির্দেশ আসে।

চীনা দূতাবাস বন্ধের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, চীন ‘বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ চুরি’ করছিল তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এর প্রতিক্রিয়ায় জানান, চীনবিরোধী মিথ্যাচারের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।

এর আগে, চীনা কূটনীতিকদের হিউস্টন কনস্যুলেট ছাড়ার জন্য ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা গত শুক্রবার বিকাল ৪টায় শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই সেখানে মার্কিন কর্মকর্তারা ভিড় করেন।  

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির শুরু থেকেই একে অপরকে দুষছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। উহান থেকে ভাইরাস ছড়ানোর জন্য সরাসরি বেইজিংকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। পরবর্তীতে হংকং জাতীয় নিরাপত্তা আইন, দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য, বাণিজ্য চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে চীনের সঙ্গে বিরোধে জড়ায় মার্কিন প্রশাসন।