শীর্ষ খবর

মালয়েশিয়ায় রায়হান কবিরের পক্ষে লড়বেন দুই আইনজীবী

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবিরের পক্ষে লড়বেন দুজন আইনজীবী। তারা হলেন সুমিতা শান্তিনি কিষনা (চেম্বারস অফ সুমিতা) এবং সেলভারাজ চিন্নিয়াহ (মেসার্স সিআর সেলভা)।
রায়হান কবিরকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করে মালয়েশিয়ার পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবিরের পক্ষে লড়বেন দুজন আইনজীবী। তারা হলেন সুমিতা শান্তিনি কিষনা (চেম্বারস অফ সুমিতা) এবং সেলভারাজ চিন্নিয়াহ (মেসার্স সিআর সেলভা)।

রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন সুমিতা।

সুমিতা বলেন, 'রয়্যাল মালয়েশিয়ান পুলিশ ও ইমিগ্রশন বিভাগকে আজ ইমেইলের মাধ্যমে (আইনজীবীদের নিয়োগের বিষয়ে) জানানো হয়েছে। চিঠিতে আমরা আমাদের ক্লায়েন্টের সঙ্গে দেখা করার জন্য একটি তারিখ চেয়েছি। এজন্য ২৭ জুলাই সোমবার দুপুর ২টায় পুলিশ সদর দপ্তর বুকিত আমানে থাকব আমরা।'

তিনি বলেন, 'রোববার ছুটির দিন। তাই, সোমবার রায়হানের সঙ্গে দেখা করব। রায়হানের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে জেনে, আমরা কীভাবে এগুবো, তা ঠিক করব।'

মালয়েশিয়ার অভিবাসী কর্মীদের ওপর চলা নিপীড়ণমূলক আচরণ নিয়ে আল জাজিরার প্রামাণ্যচিত্রে কথা বলায় রায়হান কবিরকে গতকাল শুক্রবার কুয়ালালামপুরের সেতাপাক থেকে গ্রেপ্তার করে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।

মালয় মেইল জানিয়েছে, রায়হান যেন মালয়েশিয়ায় আর ফিরতে না পারেন, সেজন্য তাকে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক খায়রুল দায়াইমি দাউদ জানিয়েছেন।

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়া পুলিশ রায়হানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালালেও কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন সে পর্যন্ত কোনও বক্তব্য দেয়নি। তবে, কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠির অপেক্ষা করছিল বলে গতকাল হাইকমিশন জানিয়েছে।

বাংলাদেশ মিশনের শ্রম বিষয়ক উপদেষ্টা জহিরুল ইসলাম বলেন, 'মালয়েশিয়ার সরকারের কাছ থেকে মিশন অফিসিয়ালি চিঠি পেলে, হাইকমিশন রায়হান কবিরের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।'

জহিরুল বলেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। চিঠি অনুযায়ী কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

২০১৪ সালে রায়হান মালয়েশিয়ায় যান এবং স্নাতক শেষ করে সেখানে কর্মরত ছিলেন। গত ৩ জুলাই আল-জাজিরায় প্রচারিত অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ এ তার দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুত্রজায়ায় অননুমোদিত অভিবাসী কর্মীদের আটকের বিষয়ে তিনি কথা বলেন। এরপরই, মালয়েশিয়া প্রশাসন তাকে আটকে অভিযান চালায়।

২৬ মিনিটের ভিডিওতে তিনি অননুমোদিত অভিবাসীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের বর্ণবাদের অভিযোগ করেন। মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী হওয়া অপরাধ নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রামাণ্যচিত্রটিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলাকালীন কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই হাজারেরও বেশি অভিবাসী শ্রমিককে আটক করা হয়। অনিবন্ধিত অভিবাসীরা সে পরিস্থিতিতে খুবই ঝুঁকির মুখে ছিল।

এটি সম্প্রচারের পর, মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ রায়হানের ছবি ও ঠিকানা প্রকাশ করে তাকে ধরিয়ে দিতে সহায়তা চায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি ঘৃণ্য বক্তব্যের মুখোমুখি হন। গ্রেপ্তার ও নিপীড়ণের ভয়ে তিনি তখন লুকিয়ে থাকেন।

এদিকে, পুলিশ বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে রায়হানের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা সন্দেহে ডেকে পাঠায়। তারাও আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন। রায়হানের ওয়ার্ক পারমিটও বাতিল করা হয়।

গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার হওয়ার আগে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় দ্য ডেইলি স্টারকে রায়হান বলেন, ‘আমার অপরাধটা কী? আমি তো কোনো মিথ্যা বলিনি। প্রবাসীদের ওপর যে বৈষম্য ও নিপীড়ন চলেছে, আমি শুধু সেই কথাগুলো বলেছি। আমি চাই প্রবাসে থাকা কোটি বাংলাদেশি ভালো থাকুক। আমি চাই পুরো বাংলাদেশ আমার পাশে থাকুক।’

আরও পড়ুন: 

মালয়েশিয়ায় আটক রায়হানের মুক্তি দাবিতে ২১ সংগঠনের বিবৃতি

রায়হানকে নির্বাসিত ও কালো তালিকাভুক্ত করবে মালয়েশিয়া 

রায়হান তোমাকে স্যালুট 

আমি সত্য বলেছি, আমার অপরাধটা কী?

 

Comments

The Daily Star  | English
VIP movements are Dhaka’s undiagnosed illness

VIP movements are Dhaka’s undiagnosed illness

If the capital's traffic condition makes you angry, you're normal

9h ago