‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ভূতের প্রবেশ ঘটেছে’
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/dr.-zafrullah_0.jpg?itok=5g01-nbc×tamp=1595757453)
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ভূত ও চক্রান্তকারীদের প্রবেশ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘একটা ভ্যাকসিন রিসার্চ হবে, তাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এত মাথাব্যথা কেন? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ভূতের প্রবেশ ঘটেছে, চক্রান্তকারীদের প্রবেশ ঘটেছে। ঠিক যেভাবে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ওষুধ কোম্পানিসহ পুঁজিবাদীর ধারকরা তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর বন্ধ করে রেখেছিল।’
গতকাল শনিবার গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থার রূপরেখা নিয়ে জনস্বাস্থ্য কনভেনশন-২০২০’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনার বিস্তার, এটা একটা সাধারণ বিষয় নয়। এটা মূলত পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম। আজকে সমাজতন্ত্র বেঁচে থাকবে কি না, সমাজতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তার একটা প্রমাণপত্র। আজকে যেভাবে আমাদের দেশে এই রোগের বিস্তার হচ্ছে, তার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রান্তটাও মনে রাখতে হবে। আমরা সবাই সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি, চীন একটা ভ্যাকসিন ট্রায়াল করতে চায় বাংলাদেশে। অনুমতি পেয়েছিল। বাংলাদেশে যেকোনো গবেষণা করার অনুমতি দেওয়ার মালিক হচ্ছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)। তাদের অনুমতিক্রমেই আইসিডিডিআর’বি’র এই গবেষণাটা শুরু করার কথা। এখানে চক্রান্তটা উপলব্ধির প্রয়োজন। আজকে পুঁজিবাদ চাইছে তৃতীয় বিশ্বকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে, যাতে আমাদের অধিকারটা কাগজে-কলমে থাকে। আমাদের নিজেদের বিষয়টা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করি না।’
‘আজকে আইসিডিডিআর’বির এই গবেষণা নতুন নয়। তারা ইউরোপীয় কোম্পানির পক্ষে অতীতেও ভ্যাকসিন গবেষণা করেছে। তখন তো আপত্তি উঠে নাই। আজ এখানে আপত্তিটা কেন? কেননা এখানে ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা আছে। এখানে জনগণের স্বাস্থ্যের ব্যাপার আছে। আজকে এই ভ্যাকসিন ট্রায়াল যদি সফল হয়, তাহলে আমাদের এখানে বিরাট অর্থ সাশ্রয় হবে। আমরা অনেকে জানি না, ভ্যাকসিন গবেষণা সময়সাপেক্ষ। অর্থ ব্যয় করতে হয়। কিন্তু, গবেষণায় সুফলে উৎপাদন মূল্য খুবই কম। সুতরাং আজকে আমাদের উচিত হবে চীনের এই গবেষণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া। এতে যদি আমরা সফল হই, চীনের সঙ্গে একটা চুক্তি থাকতে পারে। এই সফলতার ৫০ শতাংশের মালিক হবে বাংলাদেশ। জনগণের স্বার্থ রক্ষিত হবে’, বলেন তিনি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, ‘এই চক্রান্ত নিয়ে আমাদের গবেষণা প্রয়োজন, আলোচনা প্রয়োজন। আমি আশা করি আপনারা এই বিষয়টা ব্যাপকভাবে আলোচনা করবেন। আমি আগেই বলেছি, গবেষণা করার জন্য সম্মতি দেওয়ার, অনুমতি দেওয়ার মালিক বিএমআরসি। তারা অনুমতি দিয়েছে। হঠাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেটা বন্ধ করে দিচ্ছে। এটাতে প্রমাণ হয় কী রকম চক্রান্তের দিকে আমরা যাচ্ছি। এখানে বিভিন্নভাবে তাদের চররা, দালালেরা অনুপ্রবেশ করেছে। যারা তৃতীয় বিশ্বের, বাংলাদেশের তো অবশ্যই স্বার্থবিরোধী।’
‘সেই প্রেক্ষিতে আজকের আপনাদের এই সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। আমাদের জনগণকে বিষয়টা না বোঝাতে পারলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতে ওষুধের বাজারও বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা এইসব গবেষণা খুব কঠিন কিছু না। কিছুটা ফ্যাসিলিটির দরকার। চীনের সহায়তা নিয়ে এখানে আমাদের দ্রুত অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। এই জন্য বিষয়টাকে আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরতে চাই’, যোগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
Comments