পটুয়াখালীর হাটবাজারে কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি, দাম কম

বিপাকে খামারি-ব্যবসায়ীরা
পটুয়াখালীতে একটি গরুর ফার্ম। ছবি: স্টার

পটুয়াখালীর বিভিন্ন হাটবাজারে কোরবানির পশুর সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় দাম উঠছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা।

পটুয়াখালী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে ৯৮ হাজার ৯৭৮টি। জেলায় তিন হাজার ৯৯টি খামার ও স্থানীয়ভাবে গরু পালনকারীদের কাছেসহ এক লাখ ২৮ হাজার ৬৮৯টি গবাদিপশু রয়েছে। যা চাহিদার চেয়ে ২৯ হাজার ৭১১টি বেশি।

পটুয়াখালী শহরের কালিকাপুর স্বাধীনতা সড়ক এলাকার বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্মের পরিচালক ছিদ্দিক গাজী নিজের খামারে ৩০টি গরু কোরবানির জন্য লালন-পালন করেছেন। হাটে গরুগুলো বিক্রি করে ভালো আয়ের আশা ছিল তার। কিন্তু, কয়েক দিন ধরে হাটে নিয়ে গেলেও ক্রেতা গরুর দাম কম বলায় বিক্রি করতে পারছেন না।

ছিদ্দিক গাজী বলেন, ‘প্রায় সাড়ে চার মাস আগে বিভিন্ন হাটবাজার থেকে ওই ৩০টি গরু সাড়ে ১৩ লাখ টাকায় কিনেছি। গরুগুলো আমার খামারে লালন–পালন করে হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করেছি। এতে তার তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু, বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে গেলে ক্রেতারা দাম কম বলছেন। তাই বিক্রি করতে পারছেন না।’

সদর উপজেলার বহালগাছিয়া গ্রামের খামারি শামসুল হক ফকির জানান, গত বছর কোরবানির হাটে যে গরু ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এ বছর দাম বলছে ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা। বাজারে এই অবস্থা থাকলে এ বছর তার কমপক্ষে আট লাখ টাকা লোকসান হবে।

গত ২৩ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত পটুয়াখালীর বড় পশুর হাট বাদুরা হাট, বাঁধঘাট, সেহাকাঠি, গলাচিপা, মৌকরণ হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটগুলোতে গরুর সরবরাহ প্রচুর। কিন্তু, ক্রেতা কম। হাটের ইজারাদার ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাটে যে পরিমাণ পশুর সরবরাহ, সে তুলনায় ক্রেতা না থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। ক্রেতারাও দাম বলছেন কম। এতে খামারি ও গরু পালনকারী অনেককেই লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে।

গত ২৬ জুলাই সদর উপজেলার মৌকরণ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই বিক্রি করতে না পেরে গরু বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কার্তিকপাশা গ্রামের আব্দুর রব জানান, গত সপ্তাহে তার গরুর দাম হাঁকা হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। অথচ এই হাটে একই গরুর দাম ৩৫ হাজার টাকার বেশি উঠছে না। এই হাটে গরুর সরবরাহ প্রচুর।

সদর উপজেলার বাঁধঘাট হাটে গিয়ে দেখা যায়, এক ব্যাপারি কুষ্টিয়া থেকে ট্রাকে করে গরু এনে হাটে তুলছেন। শাহীন ব্যাপারি নামের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কুষ্টিয়ার আলমপুর এলাকার বাইলাপাড়া থেকে ২০টি ষাঁড় কিনে পটুয়াখালী এনেছি। পরিবহন খরচসহ আমার মোট ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু, বাজারে দাম যেভাবে পড়ছে, তাতে লোকসানের আশঙ্কা করছি।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জেলায় বড় আকারের গরুর সংখ্যা কম। তাই ব্যাপারিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় আকারের কিছু গরু নিয়ে আসছেন। বাজারে এখন পর্যাপ্ত গরু আসছে।’

গরুর দাম এখন কিছুটা কম হলেও সামনে দাম বাড়বে এবং খামারি ও গরু পালনকারীদের লোকসান হবে না বলে মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Media freedom may turn into empty promise: TIB

The graft watchdog voices serious concerns over the state of press freedom in the country

1h ago