কিছু না বলেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ধলই চা-বাগান
গতকাল সোমবার প্রতিদিনের মতো মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই চা-বাগানে চা শ্রমিকগণ তাদের কাজ যথারীতি করেন। কিন্তু আজ কাজে যাওয়ার ঠিক আগেই দেখতে পান চা-বাগান কর্তৃপক্ষ কারখানার নোটিশ বোর্ডে একটি নোটিশ টাঙিয়ে রেখেছে। যেখানে লেখা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ থাকবে।
এ ঘটনায় ধলই চা–বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। অন্যদিকে চা-বাগান চালুর বিষয়ে পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ আবেদন করেছেন কমলগঞ্জ নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।
চা-বাগানের শ্রমিক ময়না ভর বলেন, ‘আমি জানিনা চা-বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। আমি পড়ালেখা জানি না। চা-বাগানে গিয়ে দেখি কয়েকজন নারী কাজে এসেছে। পরে জানতে পারলাম এই বিষয়টি। আগে থেকে কোনো কিছুই আমাদের জানানো হয়নি।’
সকালে ধলই চা-বাগানে গেলে চা-বাগান পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক সেতু রায় বলেন, ‘কাউকে কিছু না জানিয়ে চা-বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা শ্রম আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বিষয়টি জানার জন্য ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হাবিবকে ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তারা পরিকল্পিতভাবেই এটা করেছে।’
চা-বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি গৌরাঙ্গ নায়েক বলেন, ‘কিছুদিন আগে গাছ কাটার অভিযোগ তুলে চা–বাগানের এক শ্রমিকের সন্তানকে ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন মিলে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন। বাবা চা–শ্রমিক রাধে শ্যামকে মুচলেকা দিয়ে সপরিবারে চা–বাগান থেকে বের করার পরিকল্পনা করেন তারা। এতে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করে এবং গত ২৯ জুন শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট শুরু করে। এ ঘটনায় ৫ জুলাই সন্ধ্যায় সবার সম্মতিক্রমে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।’
মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, ‘বৈঠকে চা শ্রমিকদের প্রতিবাদের মুখে অবশেষে অভিযুক্ত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে আপাতত ধলই চা–বাগান কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় ও সমস্যার স্থায়ী সমাধান দেওয়ার কথা ছিল। অথচ এখন হঠাৎ করে চা–বাগান বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন ‘
ধলই চা–বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হাবিবকে ফোন দিয়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ‘ধলই চা–বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার অবহিতকরণ একটি চিঠি আমার দপ্তরে রেখে গেছেন। সেখানে লেখা আছে নিরাপত্তার স্বার্থে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পঞ্চায়েত নেতারাও এসেছিলেন, চা-বাগান চালুর দাবির দরখাস্ত দিতে। আগামীকাল বুধবার ৩টার সময় আমরা সকল পক্ষের সঙ্গে বসে সমাধান করবো।’
Comments