দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচিতে ধলই চা বাগানের শ্রমিকরা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগান চালু করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা। আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা বাগানের প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
ঈদুল আজহার আগে আজ তাদের মজুরি দেওয়ার কথা ছিল। সোমবার গভীর রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ নোটিশ টানিয়ে দেয়। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ ধারা অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য চা বাগান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। এতে বিপাকে পড়েন প্রায় ছয় শ চা শ্রমিক। এর প্রতিবাদে গতকাল তারা বাগানের প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
চা শ্রমিক খোদেজা বেগম বলেন, ‘আজ মজুরি পেয়ে সন্তানের জন্য কিছু ভালো খাবার কিনবো ভেবেছিলাম। কিন্তু বাগান বন্ধ থাকায় তা হলো না।’
চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি গৌরাঙ্গ নায়েক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শ্রমিকদের বিভিন্ন দাওয়া দাবি নিয়ে ব্যবস্থাপকের সঙ্গে দেন দরবার চলছিল। শ্রমিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্য তিনি দমন-পীড়ন শুরু করেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা তার অপসারণ দাবি করে। এই দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা শ্রমিক আন্দোলন ঠেকাতে বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রম আইনের অপপ্রয়োগ করল।’
ধলই চা বাগান পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক সেতু রায় বলেন, ‘করোনাকালে কর্তৃপক্ষের এই বেআইনি ও একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। অবিলম্বে শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করে চা বাগান বন্ধের বেআইনি নোটিশ প্রত্যাহার করা হোক।’
ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, ‘চা বাগানের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুনীতির বিষয়ে শ্রমিকদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব বিষয় নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ‘চা বাগানের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মঙ্গলবার সকাল থেকে অফিসের সামনে কমলগঞ্জ থানার এক প্লাটুন পুলিশ অবস্থান করছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ধলই চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হাবিবকে ফোন করে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ‘আজ দুপুর ৩টার দিকে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টির সমাধান করবো।’
Comments