বন্যায় মলিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শিশুদের ঈদ আনন্দ

তিন দফা বন্যা ও করোনাভাইরাসের কারণে মলিন হয়ে গেছে সুনামগঞ্জে হাওর পাড়ের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শিশুদের ঈদ আনন্দ। গত মাসে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষ আজ ঈদের দিনেও দুর্ভোগের মধ্যে আছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনো জেলার ২৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৯৫০টি পরিবার অবস্থান করছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া আয়শা বেগম বলেন, ‘বন্যার ক্ষতি আর করোনা ভীতি কাটিয়ে মানুষ কিছুটা দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও, বিপর্যস্ত অবস্থায় আছেন উপজেলার নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।’
সন্তানের জন্য এই ঈদে কিছুই কিনতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বড় ছেলে নামাজ পড়ে এসে ঘুমিয়ে পড়েছে। এটা আগে কখনও হয়নি। ছোট ছেলে একাই খেলছে প্রতিদিনের মতো। এমন দিন আসবে ভাবতেও পারিনি।’

পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া কাছম আলীর অভিযোগ বন্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারি ত্রাণ জোটেনি তাদের ভাগ্যে। কর্মহীন থাকায় মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘গত কোরবানি ঈদে কত খেলনা কিনে দিয়েছিলাম বাচ্চাদের। কিন্তু, এবার তা ভাবলেই বিলাসিতা মনে হয়। ঈদ আনন্দ বলতে তো শিশুদের আনন্দ। কিন্তু, এবার তাদের চেহারা দেখে এতোই কষ্ট হচ্ছে যে, বলার অপেক্ষা রাখে না।’
যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া জানান, উপজেলায় বন্যা কবলিতদের ৬৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তবে, বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের কোনো বরাদ্দ এখনো আসেনি। বরাদ্দ এলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,‘ ঈদ উপলক্ষে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন রকমের খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’
Comments