গরুর চামড়া একটি পুষ্টিকর ও হালাল খাদ্য

ছবি: সংগৃহীত

ত্বক বা চামড়া যে কোনো প্রাণীর সবচেয়ে বড় অঙ্গ। সাধারণত পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে পোশাক, জুতা, ব্যাগ, বেল্ট ইত্যাদি উপায়ে ব্যবহার করা হয়। পশুর চামড়া থেকে জিলাটিন বের করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ঔষধ, প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। তবে, মানুষের খাবার হিসেবেও পশুর চামড়া একেবারে মন্দ নয়। যদিও হালাল নয়, তবে শুকরের চামড়া খুব জনপ্রিয় খাবার।

ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়ার ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা গরুর চামড়া দিয়ে তৈরি খাবার খেয়ে থাকে। বাংলাদেশের বৃহত্তর চট্টগ্রামের কোনো কোনো এলাকায় পশুর চামড়ার তৈরি খাবারের প্রচলন আছে।

খাদ্যমান হিসেবেও গরুর চামড়া একেবারে মন্দ নয়। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর চামড়ায় ২২৫ কিলো ক্যালোরি শক্তি থাকে। উপাদান হিসেবে এই ১০০ গ্রামে ৪৭ গ্রাম প্রোটিন, ৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম চর্বি, ০.০২ গ্রাম ফাইবার এবং ৪৫ গ্রাম পানি থাকে।

গরুর চামড়ার প্রোটিন সাধারণত জিলাটিন হিসেবে থাকে। জিলাটিন হাড় এবং ত্বকের গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদিও গরুর চামড়ায় ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে না বললেই চলে। তবে, খুব সামান্য পরিমাণ চর্বি থাকায় শরীরে কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

পশুর চামড়া খাবার হিসেবে প্রস্তুত করা একটু ঝামেলার কাজ। গরু-ছাগলের ভুড়ি খাবার হিসেবে প্রস্তুত করতেও ঝামেলা কম নয়। চামড়া থেকে লোম ছাড়ানোর পদ্ধতি খুব সহজেই ইউটিউব পাওয়া যাবে। লোম ছাড়ানোর পর এটি নিজস্ব স্বাদ অনুযায়ী বিভিন্ন মসলা দিয়ে কারি বা ভাজা, বা সুপ হিসেবে খাওয়া যায়। এগুলো ইন্দোনেশিয়া/মালয়েশিয়ায় কিকিল (Kikil), বা নাইজেরিয়ায় পনমো (Ponmo) খাবার হিসেবে খুব জনপ্রিয়।

গত কয়েকবছরে আমাদের দেশে গরু-ছাগলের চামড়ার দাম একেবারে কমে গেছে। তাই কোরবানির পরে অনেকেই পশুর চামড়া মাটিতে পুতে রাখছেন বা ফেলে দিচ্ছেন, যা নিতান্তই সম্পদের অপচয়। অথচ খাবার সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটিয়ে আমরা এই অপচয় থেকে বিরত থাকতে পারি।

ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

Comments

The Daily Star  | English
government bank borrowing target

Govt to give special benefits to employees, pensioners from July 1

For self-governing and state-owned institutions, the benefit must be funded from their budgets

1h ago