হাওরপাড়ের ঈদ!
তিন দফা বন্যায় হাওরপাড়ে লাখো জনজীবন একেবারে থমকে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের পিঠ একেবারে দেয়ালে ঠেকে গেছে। এজন্য ঈদের আনন্দ নীরবে চলে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্য মতে, সুনামগঞ্জের ৮৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭১২টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলায় এ পর্যন্ত সরকারিভাবে ৯১৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বন্যার্তদের মধ্যে। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের হারুনুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভালো ধান হয়েছিল কিন্তু দাম পাইনি। এর পর আসে করোনা। আরও পরে আসে তিনদফা বন্যা। এ সবের ঈদ আনন্দের ভাবনা কি ভাবা যায় ‘
‘এবার আমাদের ঘরে ঈদ নাই বললেই চলে। বন্যায় সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন ঈদ করার মতো আমাদের পরিস্থিতি নাই। তাই নীরবে ঈদ চলে যাচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
গতকাল রোববার বিকালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। টিম ‘শুনতে কি পাও’ এর পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন টিমের ত্রাণকার্যক্রম সমন্বয়ক তমিস্রা তিথি।
তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি সহায়তাই এখন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভরসা। এখনও কিছু কিছু এলাকায় বন্যার পানি রয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী পরিবারে ঈদ-আনন্দ থাকে না।’
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের বিভিন্ন সেবা দিয়ে হাজার হাজার পরিবার বাঁচতেন। তিনটি শুল্ক স্টেশনে কাজ করে ও জাদুকাটা নদীতে বালু-পাথর উত্তোলন করে চলতেন অনেকে। করোনার প্রভাব ও তিনদফা বন্যার আঘাতে সব বন্ধ। অভাবের খাতা আরও লম্বা হয়েছে। এখানে ঈদ নীরবে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাওরপাড়ে ঈদের আমেজ নেই। তারা নানান সমস্যায় আছেন।’
সমস্যায় থাকা হাওরপাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিত্তবানদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
Comments