সীমিত দর্শক নিয়ে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ?

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে সীমিত দর্শক রাখার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
Sylhet District Stadium
ছবি: শেখ নাসির

গ্যালারিভর্তি দর্শক নিয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ, সীমিত দর্শক কিংবা দর্শকবিহীন ম্যাচ। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়া কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ এর যেকোনো একভাবে আয়োজন করার সায়  দিয়েছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। তবে ম্যাচ আয়োজনে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে বলেছে সংস্থাটি।  অক্টোবরে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে তাই সীমিত দর্শক রাখার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

৮ অক্টোবর বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ বাছাইয়ের ফিরতে লেগে দেশের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে ১২ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ধাপের আরেক ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশের। এরমধ্যে বাছাইপর্বের ম্যাচ উপলক্ষে ভেন্যুতে বসানো হচ্ছে দর্শকদের জন্য নতুন আসন।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের খেলাধুলো। বিরূপ পরিস্থিতি কাটিয়ে ধীরে ধীরে খেলা ফিরলেও স্বাভাবিক সময়ের মতো দর্শক উপস্থিতি রাখা হচ্ছে না। ধারনা করা হয়েছিল এএফসিও সদস্য দেশগুলোকে বাছাইপর্বের ম্যাচ দর্শকশূন্য অবস্থায় করার কথা বলবে।

Sylhet District Stadium
ছবি: শেখ নাসির

তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিযোগিতা ব্যবস্থাপক জাবের বিন তাহের আনসারি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এএফসির দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী মাঠে দর্শক রাখতে পারবেন তারা, ‘৩১ জুলাই এএফসি আমাদের একটা গাইডলাইন দিয়েছে। সেখানে তারা বলেছে খেলা হতে পারে তিন উপায়ে- স্বাভাবিক পরিবেশে, সীমিত দর্শক নিয়ে অথবা দর্শকশূন্য মাঠে।’

তিনি জানান, স্বাভাবিক পরিবেশে খেলা আয়োজনের সায় থাকলেও তারা মূলত মাঠে ৫০ শতাংশ দর্শক রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে, ‘আমরা যদি স্বাভাবিক সময়ের মতো গ্যালারিভর্তি দর্শক নিয়ে ম্যাচ করতে চাই তবে বাফুফেকে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিতে হবে। তবে এএফসি ৫০ শতাংশ স্থানীয় দর্শক রাখতে উৎসাহ  দিচ্ছে। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং জীবানুমুক্তকরণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মাঠে প্রবেশের আগে প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’

Sylhet District Stadium

তিনি জানান, ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ টিকেট বিক্রির জন্য রাখার পক্ষে এএফসি। এরমধ্যে ৮ শতাংশ টিকেট থাকবে অতিথি দলের জন্য বরাদ্দ। আর বাকি কিছু টিকেট থাকবে সংশ্লিষ্টদের জন্য সৌজন্যমুলক হিসেবে।

স্টেডিয়ামকে নয়টি ভাগে বিভক্ত করে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের কথাও বলছে এশিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। যাদের দায়িত্ব থাকবে খেলা দেখতে আসা মানুষকে জীবানুমুক্তকরন ও নির্দিষ্ট দূরত্ব নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

জাবের আরও জানান ম্যাচের দিন পুরো স্টেডিয়াম জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাও করতে হবে তাদের, ‘ম্যাচের দিন দর্শক, খেলোয়াড়, ম্যাচ অফিসিয়ালরা প্রবেশের আগে ম্যাচ কমিশনারের উপস্থিতিতে মাঠ ফাঁকা অবস্থায় জীবাণুমুক্ত করতে হবে।’

সাধারণত খেলার আগে ও পরে দুই দলের খেলোয়াড়রা করমর্দন করেন। কিন্তু এই সময়ে এমন সৌজন্য দেখানো থেকে দূরে থাকতে বলা হবে। এমনকি নিজ দলের সতীর্থদের সঙ্গে হাত মেলানো বারণ করা হবে। শিশুদের হাতে ধরে ফুটবলারদের মাঠে প্রবেশের চেনা দৃশ্যও থাকবে না।

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের ভেন্যু সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজার। কিন্তু গ্যালারিতে চেয়ার বসানোয় তা নেমে এখন ১২ হাজারে চলে আসছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সূত্রে জানা গেছে ১২ হাজারের মধ্যে এরমধ্যে ৮ হাজার চেয়ার এরমধ্যেই বসানো হয়ে গেছে। বাকি আসনগুলো অগাস্টের মধ্যে বসিয়ে ফেলা হবে।

মাঠে সীমিত দর্শক রাখার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকলে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টিকেট বিক্রির জন্য ছাড়া হতে পারে। জাবের জানান একসঙ্গে বেশ কিছু বিষয় যুক্ত থাকায় তারা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি, ‘বাফুফে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কারণ অনেক জনবল যুক্ত করার ব্যাপার আছে এখানে। এএফসির এই গাইডলাইন মানতে খরচের ব্যাপারও আছে। যাইহোক আমরা ম্যাচে সীমিত দর্শক রাখার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছি।’

জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডেও চান সীমিত হলেও যেন দর্শক রাখা হয় মাঠে, ‘শূন্য অবস্থা থেকে একজন থাকাও ভাল। তবে একইসঙ্গে সুরক্ষার ব্যাপারটাও দেখতে হবে। ’

নিজ দেশে খেলার বড় সুবিধা হলো গ্যালারির দর্শক সমর্থন। দর্শক সমর্থন অনেক সময় খেলোয়াড়দের মুন্সিয়ানাও বাড়িয়ে দেয়। তবে একদম সীমিত দর্শক থাকলে তা পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না বলে মত জেমির, ‘নির্ভর করে গ্যালারিতে কী পরিমাণ দর্শক থাকে। যদি খুবই কম দর্শক থাকে তাহলে ম্যাচে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে তা খুব একটা প্রভাব ফেলে না।’

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka stares down the barrel of water

Once widely abundant, the freshwater for Dhaka-dwellers continues to deplete at a dramatic rate and threatens to disappear far below the ground.

1h ago