রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন: ২৯ বছর পর অযোধ্যায় মোদী
রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য ২৯ বছর পর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার মাটিতে পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই অযোধ্যায় উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় অযোধ্যায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অযোধ্যায় তাকে অভ্যর্থনা জানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে পুরো অযোধ্যা শহরকে গোলাপি-সবুজ আলোতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
মোদীই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি রামের জন্মভূমি পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
৪০ কেজি ওজনের একটি রুপার ইটের মাধ্যমে মন্দির নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন নরেন্দ্র মোদী। গত কয়েক বছর ধরে মন্দিরের জন্য ভক্তদের কাছ থেকে ‘শ্রী রাম’ লেখা খোদাই করা দুই লাখ ইট সংগ্রহ করা হয়েছে। জানা গেছে, রাম মন্দিরের ভিত ওই ইটগুলো দিয়েই তৈরি হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, মন্দির নির্মাণে ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে কয়েক লাখ ভক্ত সোনা-রুপার কয়েন ও ইট পাঠিয়েছে। এসব মূল্যবান জিনিস পাহারার জন্য পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
গত সোমবার প্রকাশিত নকশা অনুযায়ী, মন্দিরটি ১৬১ ফুট উঁচু তিন তলা কাঠামোর হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও ১৫০ জন বিশেষ অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিনাথ, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত ও অযোধ্যা মামলার অন্যতম আবেদনকারী ইকবাল আনসারিও অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত করোনানীতি অনুযায়ী, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের এ ধরনের জমায়েতে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নরেন্দ্র মোদী (৬৯), মোহন ভাগবত (৬৯) ও আনন্দিবেন প্যাটেল (৭৮) এতে অংশ নেওয়ায় অনেকেই সমালোচনা করেছেন।
যে জমিতে রাম মন্দির নির্মিত হচ্ছে তা নিয়ে কয়েক দশক ধরে হিন্দু ও মুসলমানদের বিরোধ ছিল। ১৯৯০ সালে রথযাত্রার মাধ্যমে ওই জমিতে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনের সূচনা হয়। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা জমিটিতে থাকা ষোড়শ শতকের বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে।
গত বছর জমির মালিকানা নিয়ে কয়েক দশকের বিরোধ শেষে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জমিটিতে রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যারই অন্য কোথাও জমি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দুই দশমিক ৭৭ একরের ওই বিতর্কিত জমির মালিকানা দেয় মন্দির কমিটিকে। মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্য কোথাও পাঁচ একর জমি রাজ্য সরকারকে খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেন ভারতের আদালত।
Comments