বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে লেবানন, ১৬ কর্মকর্তা আটক
বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ফুঁসছে লেবানন। গত মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেছেন অনেকে। ক্ষোভের মুখে ইতোমধ্যে দেশটির ১৬ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এনএনএ জানায়, বৈরুত বন্দরের গুদাম থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৬ কর্মকর্তাকে আটক করেছে লেবানন কর্তৃপক্ষ।
বিস্ফোরণের পর লেবাননের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ও একজন এমপি পদত্যাগ করেছেন। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চারবেল ওয়েহবে এক ফরাসি রেডিও চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবারের ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে দোষীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটিকে চারদিন সময় দেওয়া হয়েছে।’
বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত প্রায় পাঁচ হাজার। বিস্ফোরণের ফলে শহরের বেশ কিছু এলাকা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন জানান, ছয় বছর ধরে সেখানকার একটি গুদামে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ‘অনিরাপদভাবে’ মজুত রাখা ছিল। ওই বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ২০১৩ সালে বন্দরে অভিযান চালিয়ে একটি জাহাজ থেকে নামানো হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার লেবানন সরকারের অবহেলার জবাব চেয়ে রাজধানী বৈরুতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করেছে হাজারো মানুষ। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। বৈরুতের সংসদ ভবনের কাছে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
বৈরুতে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ইতালি, ইরান, কাতার, কুয়েত, ইরাক, ডেনমার্ক, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ লেবাননে সহায়তা পাঠিয়েছে। মেডিকেল সরঞ্জাম, খাদ্য সামগ্রীসহ উদ্ধারকাজে সাহায্য করার জন্য বিশেষ দলও পাঠিয়েছে কয়েকটি দেশ।
লেবাননে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল বানাচ্ছে জর্ডান। দেশটির বিমানবাহিনীর দু’টি বিমানে করে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ ওই হাসপাতালে ১৬০ জন মেডিকেল কর্মী ও চিকিৎসক থাকবেন। এ ছাড়া, সেখানে ৪৫টি শয্যা, ১০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং দু’টি সার্জারি রুম থাকবে।
Comments