চা শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের মিরতিঙ্গা চা বাগানের শতাধিক শ্রমিকের প্রত্যেকের কাছ থেকে খরচের অযুহাতে ১০০-৪০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরীর বিরুদ্ধে। এভাবে তিনি সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চা বাগানের চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে বরাদ্দকৃত প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের চেক চা বাগানগুলোতে পর্যায়ক্রমে বিতরণ চলছে। পাঁচ হাজার টাকার চেক ব্যাংকে জমাদানের জন্য একটি অ্যাকাউন্ট করে টাকা উত্তোলন করতে হচ্ছে বাগানের শ্রমিকদের। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে রহিমপুর ইউনিয়নের মিরতিঙ্গা চা বাগানে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাঁচ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের চেক ৩০৪ জন শ্রমিকের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
চা শ্রমিক নিশি গঞ্জু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরীর দুজন লোক আমার কাছ থেকে নানা খরচ দেখিয়ে ১০০ টাকা নিয়েছেন। শুধু আমার কাছ থেকে না সবার কাছ থেকেই তারা টাকা নিয়েছেন।’
নাম প্রকাশে আরেক চা শ্রমিক বলেন, ‘ধনা বাউরী উপকারভোগী চা শ্রমিকদের কাছ থেকে ১০০-৪০০ টাকা করে আদায় করেছেন। তবে, অনেকে বলতে ভয় পাচ্ছে কারণ ধনা বাউরী বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী নেতা।’
উপকারভোগী বুধু রবিদাস, ফুলমতি রবিদাস, বাবুল রবিদাস, জয়ন্তী নায়েক, রামপ্রসাদ, ইমরান আহমদসহ একাধিক চা শ্রমিক জানান, তারা পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছেন। তবে, টাকা পেতে গিয়ে ধনা বাউরীর লোকজনকে খরচাপাতি বাবদ টাকা দিতে হয়েছে।
মিরতিংগা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি মন্টু অলমিক মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা আলাপ আলোচনা করেছিলাম প্রত্যেক চা শ্রমিকদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়ার জন্য। পরে, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরী টাকাগুলো চা শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়েছে কিনা তা আমি জানি না।’
তবে, শ্রমিকদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরী। তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। কিছু মানুষ আমার সুনাম নষ্ট করতে এই কাজ করেছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম বিষয় দেখেছি। তবে, আমাদের কাছে কোনো চা শ্রমিক নেতা বা অন্য কেউ এমন অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Comments