বাটলার-ওকসের ব্যাটে ইংল্যান্ডের দারুণ জয়

chris woakes
ছবি: এএফপি

নাগালের মধ্যে থাকা রান তাড়া করতে নেমে ইয়াসির শাহর স্পিনে বিপদে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। চোখ ধাঁধানো জুটিতে সেই বিপদ কাটিয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন জস বাটলার-ক্রিস ওকস। তাদের ঝলকে প্রথম ইনিংসে অনেকখানি পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়িয়ে তুলে নিয়েছে দারুণ এক জয়।

পরিস্থিতি বিচারে প্রথম ইনিংসে জুতসই রান আনার পর ইংল্যান্ডকে ধসিয়ে বড় লিড পেয়েছিল পাকিস্তান। ম্যাচ ঝুঁকেও ছিল তাদের দিকেই। কিন্তু ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে বোলারদের মুন্সিয়ানায় তৃতীয় দিনেই খেলায় ফিরেছিল ইংল্যান্ড। চতুর্থ দিনে সেই দাপট রেখে ৩ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে জো রুটের দল।

সিরিজের প্রথম টেস্ট জিততে ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য ছিল ২৭৭ রান। ১১৭ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে শঙ্কায় পড়ার পর ৬ষ্ঠ উইকেটে ওকস-বাটলারের ১৩৯ রানের জুটিতেই ঠিক হয়ে যায় ম্যাচের গতিপথ।  বাটলার দলকে কিনারে এনে আউট হলেও ওকস অপরাজিত থেকে শেষ করেছেন খেলা। ১২০ বলে ১০ চারে ৮৪ রান করেন এই অলরাউন্ডার। সঙ্গে বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে নায়কও তিনি।

আগের দিনের ৮ উইকেটে ১৩৭ রানের সঙ্গে আরও ৩২ রান যোগ করতে পারে পাকিস্তান। যার প্রায় পুরোটাই এসেছে লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহর ব্যাট থেকে। ইয়াসির পরে বল হাতেও দলকে জেতাতে সর্বোচ্চ নিংড়ে দেন।

২৭৭ রান তুলতে নেমে প্রথম ঘণ্টা সতর্ক থেকে পার করে দেয় ইংল্যান্ড। দ্বাদশ ওভারে রোরি বার্নসকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রো আনেন মোহাম্মদ আব্বাস। অধিনায়ক জো রুটের সঙ্গে ডম সিবলি মিলে গড়ে তুলেন জুটি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনের ৬৪ রান ম্যাচের প্রেক্ষিতে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গতিময় পেসার নাসিম শাহ রুটকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে এই জুটি ভাঙ্গার পর ম্যাচে ফিরে এসেছিল পাকিস্তান।

লাফিয়ে উঠা দারুণ এক ডেলিভারিতে বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে দেন ইয়াসির। বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদির লাফানো বলে কাবু হয়ে যান অলি পোপও। জয়ের আশায় নড়েচড়ে বসা পাকিস্তানি সমর্থকরা বাকিটা সময় হতাশ হয়েছেন বাটলার-ওকসের ব্যাটে।

কিপার ব্যাটসম্যান বাটলার কদিন আগেও টেস্টে রান পেতে ভুগছিলেন। ছন্দ পাওয়ার পর দলের বিপদে নেমে চালান পালটা আক্রমণ। অলরাউন্ডার ওকসকে নিয়ে দ্রুতই ম্যাচের লাগাম নিয়ে নেন নিজেদের হাতে।

অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে রান এনেছেন বাটলার। উইকেটে জমে না গিয়ে হরদম প্রান্ত বদল করে সচল রাখেন রানের চাকা। এতে ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকি পাকিস্তানি বোলারদের উপর। পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলকে আর কোন শঙ্কায় পড়তে দেননি তারা।

পাকিস্তানের হয়ে শেষ পর্যন্ত লড়েছেন ইয়াসির। এই লেগ স্পিনারই বারবার বিপাকে ফেলছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। জয় থেকে ২১ রান দূরে বাটলারকে এলবিডব্লিও করে ফেরান ইয়াসির। তবে ততক্ষণে ম্যাচ অনেকটা ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয়।

ইয়াসিরের বলে রিভার্স সুইপ করতে যাওয়া বাটলার ফেরেন ১০১ বলে ৭৫ রান করে। ওই পরিস্থিতি থেকে কেবল বিস্ময়কর কিছু হলেই জিততে পারত পাকিস্তান। দলের জয় থেকে ৪ রান আগে স্টুয়ার্ট ব্রডকেও শিকার করেছিলেন ইয়াসির। কিন্তু দুই ইনিংস মিলে ৮ উইকেট নেওয়া এই লেগ স্পিনার কেবল বাড়িয়েছেন সফরকারীদের আক্ষেপ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ১০৯.৩ ওভারে ৩২৬
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৭০.৩ ওভারে
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ৪৬.৪ ওভারে ১৬৯ (আগের দিন ১৩৭/৮) (ইয়াসির ৩৩, আব্বাস ৩*, নাসিম ৪; অ্যান্ডারসন ০/৩৪, ব্রড ৩/৩৭, আর্চার ১/২৭, বেস ১/৪০, ওকস ২/১১, স্টোকস ২/১১)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: ৮২.১ ওভারে ২৭৭/৭ (বার্নস ১০, সিবলি ৩৬, রুট ৪২, স্টোকস ৯, পোপ ৭, বাটলার ৭৫, ওকস ৮৪*, ব্রড ৭, বেস ০*; আফ্রিদি ১/৬১, আব্বাস ১/৩৬, নাসিম ১/৪৫, ইয়াসির ৪/৯৯, শাদাব ০/৩৪)
ফল: ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Bangladesh to push for tariff cuts in USTR talks in Washington today

Bangladesh has been engaged in negotiations to sign a tariff agreement with the US

9m ago