প্রবাসে

ইউরোপের ধনী দেশ

লুক্সেমবার্গ ইউরোপের সব থেকে ছোট এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। পাহাড়, ছোট ছোট নদী আর বনাঞ্চল নিয়ে ইউরোপের অন্যতম সুন্দর দেশ লুক্সেমবার্গ। যাকে ইউরোপের রাজধানীও বলা হয়। কারণ ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত এর পশ্চিমে এবং উত্তরে বেলজিয়াম, পূর্বে জার্মানি এবং দক্ষিণে ফ্রান্সের সীমানাযুক্ত এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এই ছোট্ট দেশেই অবস্থিত।
ছবি: ফয়সাল আহমেদ

লুক্সেমবার্গ ইউরোপের সব থেকে ছোট এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। পাহাড়, ছোট ছোট নদী আর বনাঞ্চল নিয়ে ইউরোপের অন্যতম সুন্দর দেশ লুক্সেমবার্গ। যাকে ইউরোপের রাজধানীও বলা হয়। কারণ ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত এর পশ্চিমে এবং উত্তরে বেলজিয়াম, পূর্বে জার্মানি এবং দক্ষিণে ফ্রান্সের সীমানাযুক্ত এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এই ছোট্ট দেশেই অবস্থিত।

ছোট দেশ হওয়াতে ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় এখানে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা খুব কম। মাত্র ১৫০-২০০ বাংলাদেশি এখানে বসবাস করে। যারা কাজ করে তাদের বেশিরভাগই এইখানে স্থায়ীভাবে পরিবার নিয়ে থাকে। এখানে জীবনযাত্রার মান খুব উন্নত এবং আয় বেশি হওয়ার কারণে ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে জীবনযাত্রাও ব্যয়বহুল।

লুক্সেমবার্গের অর্থনীতি পূর্বে ইস্পাত এবং শিল্পখাতের ওপর নির্ভরশীল হলেও বর্তমানে ব্যাংকিং নির্ভর। বিশ্বের অন্যতম সব বড় বড় কোম্পানির হেড কোয়ার্টার এইখানে। এখানে প্রবাসী নাগরিকরা চাকরি হারালেও তাদের জন্য সরকার থেকে ভাতা দেওয়া হয় এবং করোনাকালীন সময়েও আশি শতাংশ বেতন চার মাস সরকার থেকে বহন করা হয়েছে।

এইখানে প্রায় বিশ্বের সব দেশ থেকেই শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। রিসার্চ বেইসড পড়াশোনা এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করেছে। লুক্সেমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের ৪১৪টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১২ এবং সহস্রাব্দ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করে।

উন্নত দেশের মতো এখানে চিকিৎসা সেবার মানও অনেক উন্নত। প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যবীমা বাধ্যতামূলক। এই করোনাকালীন সময়েও এখন পর্যন্ত এই দেশে করোনা রোগী সুস্থতার হার বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। ৪৪৪৭ জন রোগীর মধ্যে ৪০১৬ জনই সুস্থ হয়েছেন। জিডিপির সাত ভাগ স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করা হয় যা ৪.১ বিলিয়ন ডলার, শুধুমাত্র ৬.৩ লাখ মানুষের জন্য। একটি দেশের উন্নতি অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করলে, লুক্সেমবার্গ অদ্বিতীয়।

লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসি কিংবা কনসুলেটর নাই। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ থেকে যারা পড়তে আসে তারা না কোন সুযোগ সুবিধা পায়, না কোন সাহায্য। অনেক আগে থেকেই কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি এখানে থাকলেও তাদের মধ্যে কোন কমিউনিটি গড়ে উঠেনি। ভারত, চীন এমনকি নেপাল ও পাকিস্তানের কমিউনিটিও এখানে অনেক শক্তিশালী। প্রথম অবস্থায় একজন স্টুডেন্টর পক্ষে এখানে সার্ভাইভ করতেই অনেক কষ্ট হয়ে পড়ে। আগেই বলেছি এইখানে জীবনযাত্রা অনেক ব্যয়বহুল। অর্থনৈতিকভাবে সামর্থ্য না থাকলে এখানে টিকে থাকা কষ্টকর। কারণ ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো এখানে পার্ট টাইম জব পাওয়া অনেক কঠিন। আমাদের সহপাঠীদের অন্যান্য দেশের সবাই তাদের দেশের ফান্ড থেকেই পড়াশোনা করে, তাই মাস শেষে তাদের ৫০০-৬০০ ইউরো উপার্জন করার টেনশনও থাকে না। যেটা আমাদের বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের করতে হয়। যার ফলে বেশিরভাগইই পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারে না। এতে করে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পালিয়ে যায়।

পরিশেষে বলতে চাই, অন্যান্য দেশের মতো যদি বাংলাদেশ সরকারও স্টুডেন্টদের একটু সুযোগ সুবিধা করে দিত তাহলে বাংলাদেশি স্টুডেন্টরাও পড়াশোনা শেষে ভাল চাকরি করতে পারতো এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারতো।

আমার একটাই অনুরোধ, এম্বাসি করতে না পারলেও যাতে একটা কনসুলেট অফিস বাংলাদেশ সরকার থেকে এই দেশে করার ব্যবস্থা করে দেয়। যারা সার্বক্ষণিক এদেশে যারা আছে এবং স্টুডেন্টদের তথ্য ও নানা রকম সাহায্য সহযোগিতা করতে পারে। যা একটি দেশের নাগরিক হিসেবে পাওয়া আমার প্রাপ্য।

(লেখক: লুক্সেমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত)

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

5m ago