পুঁজিবাজারের ব্যাপক উত্থান

দীর্ঘ মন্দার পর অবশেষে পুঁজিবাজারে ব্যাপক উত্থানের দেখা মিলল। আজ রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫৪৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সূচকটি ২০১৩ সালে চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান।
Share_Market_DSEC

দীর্ঘ মন্দার পর অবশেষে পুঁজিবাজারে ব্যাপক উত্থানের দেখা মিলল। আজ রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫৪৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সূচকটি ২০১৩ সালে চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান।

অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব আশঙ্কার চেয়ে কম পড়া, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকরী উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার হওয়া এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে অংশগ্রহণই এ উত্থানের মূল কারণ বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা জুন মাসের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি। রপ্তানির এ তথ্য বিনিয়োগকারীদের আশান্বিত করেছে। তাছাড়া, তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানিই তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, তাদের মুনাফা ২০ থেকে ২৫ শতাংশের মতো কমেছে। কিন্তু, কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন শেয়ার কেনা লাভজনক বলে মনে করছেন।

এ ছাড়া, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে গত মে মাসে শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠনের পর তাদের পক্ষ থেকে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে বেশ কয়েকটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে আইন ভাঙার কারণে বড় অংকের জরিমানা করা। বন্ড মার্কেটকে সক্রিয় করতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া। ব্যাংকিং সেক্টরের বিনিয়োগ বাড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

পাশাপাশি এ কমিশন তালিকাভুক্ত কোম্পানি পরিচালকদেরকে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের নিয়ম পরিপালনে সময় বেধে দিয়েছে। যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মৌলভিত্তিহীন কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির (আইপিও) পথ বন্ধ করা হয়েছে। আর ভালো কোম্পানির আইপিও প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।

‘বিএসইসির পক্ষ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে,’ বলেন মাসুম ওসমান নামক একজন বিনিয়োগকারী। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন।

পুঁজিবাজারের বড় সমস্যাই ছিল আস্থার অভাব, যেটি বর্তমান কমিশন খুব দ্রুত দূর করতে পারছেন তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে। বিশেষ করে খারাপ কোম্পানির উদ্যোক্তাদেরকে শাস্তি প্রদান এবং বাজারের কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে মানুষ কমিশনের উপর আস্থা পেয়েছে, তিনি যোগ করেন।

আস্থার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন ফলে বাজারে সূচক বাড়তে শুরু করেছে, বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্চেন্ট ব্যাংকার।

তিনি বলেন, ‘১৪টি ব্যাংক প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠন করেছে, এর মধ্যে অনেকে বিনিয়োগও শুরু করেছে।’

আজ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১,১২৮.৬৪ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের। এ কোম্পানির শেয়ারে লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা। এছাড়া ব্রিট্রিশ অ্যামেরিকান টোবাকো, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সিঙ্গার বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস ছিল শীর্ষ লেনদেনের তালিকায়।

আর শীর্ষ দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল তুং হাই নিটিং, নিটল ইন্সুরেন্স, সাফকো স্পিনিং, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সাভার রিফ্রেক্টরিজ।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago