গাজীপুরে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা জরিমানা
হাসপাতালের লাইসেন্স না থাকা, ল্যাবরেটরিতে মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল সামগ্রী ও ওষুধ সংরক্ষণ, অপারেশন থিয়েটারের অব্যবস্থাপনাসহ নানা অনিয়মে গাজীপুরে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে সাড়ে সাত লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার এই হাসপাতালটির মালিক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দীন খান আলমগীর।
সোমবার দুপুর থেকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখে এসব অনিয়মের খোঁজ পান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত টাস্কফোর্স টিম।
টিমের সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা অধিশাখা) উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টাস্কফোর্সের কার্যক্রমটিকে অভিযান না বলে পরিদর্শন বলা যেতে পারে। হাসপাতালে অনিয়ম অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। টাস্কফোর্সের সদস্যরা সোমবার হাসপাতালটি পরিদর্শন করে নানা খোঁজ খবর, তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেন। তবে হাসপাতালের কলেজ অংশে তারা যাননি। ওই হাসপাতালের লাইসেন্স যাচাই করে এর বৈধতা পাওয়া যায়নি। গত চার বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়া চলছে হাসপাতালটি। ল্যাবরেটরিতে মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল সামগ্রী পাওয়া গেছে। কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এবং অপারেশন থিয়েটারের অব্যবস্থাপনা ছিল।
লাইসেন্সের ব্যাপারে তিনি বলেন, লাইসেন্স যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একটি শিডিউল থাকে। সবশেষ শিডিউল অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ২৩ আগস্ট লাইসেন্স নবায়নের সময়সীমা দেওয়া আছে। ওই সময়সীমার মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, এসব অনিয়মের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাড়ে সাত লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে পাশের সেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ এবং নানা অনিয়মের কারণে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানার করে সেই অর্থ আদায় করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাতিষ্ঠানিক শর্ত পূরণ না করা, নিজস্ব ভবন না থাকা, পরীক্ষাগারের অনুমোদন না থাকা, জনবল বা পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকার পরও ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা করে প্রতারণাসহ নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ছিল সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এই হাসপাতালটি এমপি মহিউদ্দীন খান আলমগীরের মালিকানাধীন। ছয় বছর আগে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা হলেও এখানে চিকিৎসা সেবার ন্যূনতম সুযোগ না থাকার অভিযোগ রয়েছে।
মহামারির শুরুতে এই হাসপাতালটি কোভিড চিকিৎসার নামে ১০০ শয্যার একটি ইউনিট খুলেছিল। পরে রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর কোভিড ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
এমপি মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মালিকানাধীন ‘সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে’ অভিযান
Comments