এভাবে খেললে অবসরের সিদ্ধান্ত আমার হাতে থাকবে না: অ্যান্ডারসন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে কেবল ৫ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট পাওয়ার পর, দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট শূন্য। উইকেট আসছে না, টেস্ট ইতিহাসের সফলতম বোলার জেমস অ্যান্ডারসনের বোলিংয়েও মিলছে না চেনা ধার। ৩৮ পেরুনো এই পেসারের অবসরের গুঞ্জন তাই ছড়িয়ে পড়েছিল। তা আপাতত নাকচ করে দিয়েছেন তিনি, সেই সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্সের পড়তিতে জানিয়েছেন চরম হতাশা।
দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে ১৫৪ টেস্টে ৫৯০ উইকেট হয়ে গেছে ডানহাতি অ্যান্ডারসনের। পেসারদের মধ্যে টেস্টে যা সর্বোচ্চ উইকেট।
বয়স বিবেচনায় অ্যান্ডারসনের অবসর নিয়ে আগেও কথা উঠেছে। তবে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে, কবে খেলা ছাড়বেন সেই সিদ্ধান্ত নিজের কব্জাতেই রেখে এসেছেন তিনি।
ম্যানচেস্টারে সহায়ক পরিস্থিতি পেয়েও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের কাবু করতে পারেননি। মাঠেই হতাশা ঝরেছে তার শরীরী ভাষায়। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯৭ রানে কেবল ১ উইকেট।
পাকিস্তানের বিপক্ষেই ক্যারিয়ারের ইতি হচ্ছে অ্যান্ডারসনের, এমন গুঞ্জন চড়া হয় ব্রিটিশ গণমাধ্যমে। সাউদাম্পটনে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে গিয়ে সেই গুঞ্জনের ডালপালা ছেঁটেছেন। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন খেলে যাওয়ার কথা, ‘যতদিন খেলা যায় আমি খেলতে চাই।’
কিন্তু যেভাবে বল করছেন, এভাবে করতে থাকলে অবসরের সিদ্ধান্ত যে তার হাতে আর থাকছে না তাও অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি, ‘গত সপ্তাহে আমি যেমন বল করেছি, এরকম যদি করতে থাকি তাহলে অবসর নেওয়ার ক্ষমতা আমার হাত থেকে ফসকে যাবে, তখন এটা নির্বাচকদের হাতে চলে যাবে।’
২৬.৯৭ গড়ে ৫৯০ উইকেট নেওয়া। ইংল্যান্ডের বহু টেস্ট জেতানোর নায়ক কেবল এক টেস্টে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে অবসরের ফিসফিসানি শুনবেন, এমনটা প্রত্যাশা করেননি বলেও জানান, ‘আমি এখনো খেলার জন্য ক্ষুধার্ত। আমার হতাশা গত সপ্তাহের পারফরম্যান্সের জন্য। একটা খারাপ ম্যাচের পর অবসর নিয়ে যেমন গুঞ্জন শুরু হয়েছে, আমার মনে হয় না এটা ন্যায্য।’
দুই দিকে বল স্যুয়িং করানোর মাস্টার পাচ্ছিলেন না জুতসই ছন্দ। ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাঠের মধ্যেই হতাশা বেরিয়ে আসছিল তার। অ্যান্ডারসন জানালেন গত প্রায় এক দশকে এমনটা হয়নি তার। তবে এখনো যে টেস্ট খেলার মতো সব রকমের সামর্থ্য তার আছে সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘আমি ভাল বল করিনি। ছন্দ পাচ্ছিলাম না। গত দশ বছরের মধ্যে এই প্রথম আমি মাঠে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম, হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম।’
‘আশা করি মানুষকে দেখাতে পারব টেস্টে খেলতে যা দরকার তা আমার আছে। ‘আমি মনে করি না এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময়, মনে করি একটা খারাপ ম্যাচ গেছে।’
আর ১০ উইকেট পেলেই ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টে ৬০০ উইকেটের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করবেন। তিনি এটা করতে পারেন কিনা তা নিয়ে কৌতূহল অনেকের। তবে ৬০০ উইকেট না পেলেও জীবনে যা কিছু পেয়েছেন তা নিয়ে তৃপ্তি থাকবেন বলে জানালেন ইংলিশ পেসার, ‘ইংল্যান্ডকে জেতাতে আমি অবদান রাখতে চাই। পুরো ক্যারিয়ারে এটাই আমার ধ্যানজ্ঞান ছিল।’
‘যদি আমি ৬০০ উইকেট পাই তাহলে দারুণ, যদি না পাই তবু যা পেয়েছি তা নিয়ে আমি খুশি।’
Comments