মানবপাচারের অভিযোগে নোয়াখালীতে গ্রেপ্তার ১
নোয়াখালীতে মানবপাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার আইয়ুবপুর গ্রাম থেকে মাহবুবা আক্তার (৩৫) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আজ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্যাতন ও প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তি গতকাল মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলার পর বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য মাহবুবাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইতালিতে লোক পাঠানোর কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা ওই নারী স্বীকার করেছেন বলে তিনি জানান।
ওসি বলেন, আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আজ আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হলে, আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিন (২০) ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে লিবিয়ায় যান। সেখানে শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে সোনাইমুড়ী উপজেলার সাতঘরিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আলমগীর হোসেন শাহাব উদ্দিনকে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেন।এক পর্যায়ে, আলমগীর ও তার সহযোগীরা লিবিয়ার ত্রিপলিতে শাহাব উদ্দিনকে হাত পা বেধে মারধর ও নির্যাতন করে। আলমগীর শাহাব উদ্দিনের পরিবারের কাছে ফোন করে নির্যাতনের কথা জানান এবং মুক্তিপণ হিসাবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন।
শাহাব উদ্দিনের পরিবার আলমগীরকে ৮০ হাজার টাকা পাঠানোর পর, আলমগীর হোসেন শাহাব উদ্দিনের পরিবারের কাছে আবার ফোন করে এবং তাকে ইতালিতে পাঠিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন।
আলমগীরের দাবী অনুযায়ী গত ১৮ মে আলমগীরের স্ত্রী মাহবুবা আক্তার লিপির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আড়াই লাখ টাকা পাঠানোর পর, আলমগীর আরও দেড় লাখ টাকা দাবি করলে শাহাব উদ্দিনের বড় ভাই আব্দুল খালেক বিষয়টি নোয়াখালী পুলিশ সুপারকে জানান।
পুলিশ সুপারের পরামর্শ অনুযায়ী আব্দুল খালেক সোমবার বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে মামলা করেন।
যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত নারী ও তার স্বামীসহ একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় দরিদ্রদের ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে, কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
Comments