ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগে মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বিদ্যাকুট গ্রামের এক সরকারি কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ইতালি প্রবাসীর জায়গায় থাকা বিভিন্ন বনজ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত ছদর উদ্দিন মানিক রাজধানীতে কর্মরত কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। তার মা-বাবাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জায়গাটির লিজকৃত মালিক একই গ্রামের দুলাল মিয়া।
এ ছাড়াও, ওই ইতালি প্রবাসী তাজুল ইসলামের ৩৫ শতক জায়গা দখল করে নেওয়ার অভিযোগে ইতালিস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসে লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের অনুলিপি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া হয়েছে।
তবে, ওই রাজস্ব কর্মকর্তার প্রভাবে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম।
দূতাবাসে করা আবেদনে বলা হয়, প্রবাসী তাজুলের বড় ভাই আবু শামীমের ছেলে রাজধানীতে কর্মরত কাস্টমস কর্মকর্তা ছদর উদ্দিন মানিক ও তার পরিবারের অন্যান্যরা মিলে পৈতৃক ও ক্রয়সূত্রে তাজুলের পাওয়া বাড়ি সংলগ্ন ১১ শতক জমি ও ২৪ শতক পরিমান পুকুরের জায়গা দখল করে নিয়েছেন।
প্রবাসী তাজুল জানান, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি প্রবাসে অবস্থান করছেন। ফলে বাড়ি সংলগ্ন ১১ শতক জায়গাসহ ২৪ শতক আয়তনের একটি পুকুর একই গ্রামের মৃত তঞ্জব আলীর ছেলে দুলাল মিয়ার কাছে লিজ দেন। কিন্তু, লিজ দেওয়া এই জায়গাগুলো ছদর উদ্দিন মানিক ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে দখল করে নিয়েছেন। তারা লিজের মালিককে গাছ ও মাছ ভোগ করতে দিচ্ছেন না।
লিজ নেওয়া দুলাল মিয়া বলেন, ‘পাঁচ বছরের জন্য পুকুর ও তিন বছরের জন্য বাড়ি সংলগ্ন জায়গা লিজ নেন তিনি। এর মধ্যে পুকুরে চাষ করা মাছগুলো তাকে বিক্রি করতে দিচ্ছেন না মানিক ও তার পরিবারের লোকজন। জমিতে লাগানো গাছগুলোও তারা কেটে নিয়েছে।’
গেল ৩ এপ্রিল গামারি ও মেহগনিসহ লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে কোনো বিচার না পেয়ে দুলাল বাদী হয়ে ২০ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা পুকুরের সব মাছ বিষ ঢেলে মেরে ফেলাসহ দুলালকে জায়গা থেকে উচ্ছেদ ও মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলা দায়েরের প্রায় এক মাস হতে চললেও অভিযুক্তরা আইনের আওতায় না আসায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বাদী দুলাল মিয়া।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ছদর উদ্দিন মানিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, ‘মামলার নথিপত্র দেখে ও তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে বলা যাবে।’
Comments