‘বন্দুকযুদ্ধ’র পর পুলিশের করা মামলা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ
২০১৭ সালে ‘বন্দুকযুদ্ধ’র নামে হত্যার অভিযোগে মহেশখালী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা ফৌজদারি দরখাস্তটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। মামলাটি উচ্চতর আদালতে বিচারাধীন থাকায় আজ বৃহস্পতিবার এই আদালত থেকে এটি খারিজ করে দেন বিচারক মোহামমদ আব্বাস উদ্দীন।
একইসঙ্গে এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’র ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় যে মামলাটি দায়ের করেছিল, সেটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
২০১৭ সালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের মাঝেরপাড়া গ্রামের মৃত নুরুচ্ছাফার ছেলে আবদুস সাত্তার। ঘটনার দিনই পুলিশ মামলা দায়ের করেছিল। আর গতকাল নিহতের স্ত্রী হামিদা আকতার ফৌজদারি দরখাস্তটি আদালতে দাখিল করেন।
বাদী তার আরজিতে উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টায় নিজ বাড়ি থেকে তার স্বামী আবদুস সাত্তারকে ওসি প্রদীপ দাশসহ একদল পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধ’র নামে গুলি করে হত্যা করে। ‘বন্দুকযুদ্ধ’র পর তার স্বামীকে অস্ত্র তৈরির কারিগর বানিয়ে ‘আবদুস সাত্তারের কাছ থেকে তিনটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে’ মর্মে থানায় মামলা দায়ের করেন ওসি প্রদীপ দাশ। অথচ তার স্বামী ছিলেন লবণচাষি। তিনি কখনোই অস্ত্র তৈরির কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন না। স্থানীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী ফেরদৌস বাহিনীর প্রধান ফেরদৌসের মদদে ও সহযোগিতায় পুলিশ তার স্বামীকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’র নামে হত্যা করে।
বাদী হামিদা আকতারের আইনজীবী শহীদুল ইসলাম জানান, এই ঘটনার পর স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন হামিদা আকতার। হাইকোর্ট হামিদার রিট পিটিশন গ্রহণ করে তার আবেদনটিকে ‘ট্রিট ফর অ্যাপেয়ার’ হিসেবে গ্রহণ করার ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারকে। এই আদেশের অনুবলে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই বাদী হাইকোর্টের আদেশের সত্যায়িত অনুলিপিসহ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন। এর মধ্যে বিবাদী পক্ষ (প্রদীপসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা) হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল করে পুনরায় নতুন করে শুনানি করার জন্য হাইকোর্টকে বলেন। চেম্বার জজের এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাদী পুনরায় হাইকোর্টে আবেদন করেন। এরপর আজ অবধি এর শুনানি হয়নি।
Comments