৪ পুলিশসহ ৭ আসামিকে র্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা কারাগার থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১৫’র (র্যাব) কক্সবাজার কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করে আসামিদের কারাগার থেকে নিয়ে যায় র্যাবের একটি টিম।’
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকৎসা কর্মকর্তা শাহীন মোহাম্মদ আবদুর রহমান চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাত জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তাদেরকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ হয় ১১টা ২৫ মিনিটে। তাদের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা নেই।’
ওই সাত আসামির মধ্যে চার পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন— সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ লিটন মিয়া এবং কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন। অপর তিন আসামি হলেন— টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা দুইটি মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আয়াছ উদ্দীন।
এই সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক। রিমান্ড মঞ্জুরের আগে আদালতের নির্দেশনামতে, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুনকে গত ৮ ও ৯ আগস্ট কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্টট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। পরে তাদের চার জনকে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ আগস্ট ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১২ আগস্ট আদালত শুনানি শেষে চার পুলিশ সদস্যের প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
পুলিশের মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আয়াছ উদ্দীনকে গত ১১ আগস্ট টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবনিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র্যাব। ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটায় তাদের আদালতে সোর্পদ করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১২ আগস্ট তাদের তিন জনকেও সাতদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। এই তিন জন সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে ৫ আগস্ট টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন। সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে পরবর্তীতে আসামি করা হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
হত্যা মামলার মূল তিন আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিত গ্রেপ্তার হয়ে গত ৬ আগস্ট থেকে জেলা কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। আদালত তাদেরও সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করলেও এখনও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদেরকে নিজের হোফাজতে নেননি।
আরও পড়ুন:
নিরস্ত্র সিনহাকে গুলি করেছিলেন লিয়াকত: সিফাত
পুলিশের মাদক মামলায় শিপ্রার জামিন
পুলিশের দুই মামলায় সিফাতেরও জামিন
সিনহা হত্যা মামলার ৮ আসামি আদালতে, প্রদীপ দাশকে নেওয়া হচ্ছে কক্সবাজার
টেকনাফে নিহত সাবেক মেজর সিনহার মাকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন, বিচারের আশ্বাস
পুলিশের গুলিতে সাবেক মেজর নিহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শুরু
মেজর সিনহার বড় বোনের হত্যা মামলা দায়ের
এএসআই লিটন, কনস্টেবল কামালসহ ৪ আসামিকে রিমান্ডে চায় র্যাব
৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর হলেও ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি এখনো কারাগারে
সিনহা হত্যায় পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে কক্সবাজারের এসপিকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে: রাওয়া চেয়ারম্যান
সিনহা হত্যায় পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে কারাগারে প্রেরণ
সিনহা হত্যায় ৩ সাক্ষী ও ৪ পুলিশ সদস্য ৭ দিনের রিমান্ডে
সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ-লিয়াকতসহ ৩ আসামি রিমান্ডে
সিনহা হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ দাশসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
Comments