৩ কিশোর নিহত

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার সদস্যসহ আটক ১০

Jessore-1.jpg
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

হাসপাতালে ভর্তি কিশোর বন্দিরা দাবি করছে, কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক পিটুনিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি তৌহিদুল ইসলাম জানান, তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১০ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদকালে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব না।

বৃহস্পতিবার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মারধরের ঘটনায় তিন বন্দি কিশোর নিহত হয়। এসময় আহত হয় আরও ১২ জন। আহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

ঘটনার পরপরই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা মুশফিক আহমেদ জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রে বন্দি কিশোরদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জন মারা যায় ও লাঠির আঘাতে মারাত্মক জখম হয় ১৫ জন। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের পর্যায়ক্রমে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক নাইম, পারভেজ ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অমিয় দাশ বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তারা মারা গেছে। কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া বলা সম্ভব না।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন বন্দিরা বলছে, ‘গত ৩ আগস্ট কেন্দ্রের আনসার সদস্য নূর ইসলামের পক্ষের কয়েকজন বন্দি মাদক সেবন করে মাতাল অবস্থায় চুয়াডাঙ্গার পাভেল নামে এক বন্দিকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে পাভেল অফিসে অভিযোগ করলে গালিগালাজ করে তাকে আবারও মারধর করা হয়। ঘটনার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে অফিসে ডেকে বিস্তারিত শোনার পর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, প্রবেশ অফিসার মুশফিকসহ অন্যান্যরা মিলে মারধর করেন। বিকাল থেকে দফায় দফায় তাদের মারধর করে মাটিতে ফেলে রাখা হয়। তাদেরকে ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।’

‘পরে একজন করে মারা গেলে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর রাত ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে কয়েক দফায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত বন্দি রাসেলের আগামী মাসে জামিনে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। বেদম মারধরে সময়মত চিকিৎসা না দেওয়ায় রাসেল মারা যায়’, যোগ করে বন্দিরা।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে বের হয়ে খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দুঃখজনক। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের কথার সত্যতা ও যৌক্তিকতা রয়েছে। আমরা যারা অপরাধ নিয়ে কাজ করি, তারা ঘটনার প্রায় ছয় ঘণ্টা পরে বিষয়টি অবহিত হয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মামলা হবে। সেই মামলার বাদী যে কেউ হতে পারে।’

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘কী কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। আমরা তদন্ত কমিটি করে দেব। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

5h ago