আদিতমারীতে ২ বছরেও রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার ও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘অবহেলায়’ দুই বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বুড়িরবাজার ও মহিষখোঁচা সড়ক। ছবি: স্টার

সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার ও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘অবহেলায়’ দুই বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।

তারা দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানালে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঠিকাদারকে দায়ী করেছে।

আরসিসি ঢালাই কাজ শেষ না হওয়ায় উপজেলার বুড়িরবাজার ও মহিষখোঁচা এলাকায় যাতায়াতকারীরা প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। পানি ও কাদায় রাস্তাটি একাকার। সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে পারছেন না। সাধারণ যানবাহন চলতে গিয়ে উল্টে যাচ্ছে।

সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে জানিয়ে এলাকাবাসী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রাস্তাটিতে নিম্নমানের ইট ও পুরাতন বিটুমিন মিশ্রিত খোয়া ব্যবহার করায় এর বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। রাস্তা ডেবে যাচ্ছে।

লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের বন্যায় নষ্ট হওয়া সড়কগুলো সংস্কার করতে এফডিডিআরআরআইএফ প্রকল্পের আওতায় বরাদ্ধ দেয় সরকার।

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ৪০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ আসে। এটি বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি।

এ প্রকল্পের আওতায় আদিতমারী উপজেলার বুড়িরবাজার-মহিষখোঁচা সংযোগ সড়কের পাঁচ কিলোমিটার সংস্কার করতে বরাদ্ধ দেওয়া হয় ২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৭২ টাকা। এর মধ্যে বুড়িরবাজারে ১০০ মিটার ও মহিষখোঁচা বাজারে ৫০০ মিটার আরসি ঢালাই ধরা হয়।

দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদার আব্দুল হাকিম। তার কাছ থেকে কমিশনে কাজটি কিনে নিয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরু থেকে তারা নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করে এলেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুর রহমান। তিনি ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদের সঙ্গে আতাঁত করে নিম্নমানে ইট, পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে দায়সারা কাজ করেন।

তাদের আরও অভিযোগ: সড়কের দুই পাশে তিন ফুট মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। ফলে কাজ শেষ না হতেই পাঁচ কিলোমিটারের এ সড়কটির বেশ কয়েকটি জায়গায় ভেঙে গেছে। সড়ক ডেবে গিয়ে গর্তেরও সৃষ্টি হয়েছে কয়েকটি স্থানে। জোড়াতালি দিয়ে সড়কটির সংস্কার করলেও করা হয়নি দুই বাজারে ৬০০ মিটার আরসিসি ঢালাই।

আরসিসি ঢালাই অসম্পুর্ণ রখে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদার ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে মোট বরাদ্দের ৯৫ শতাংশ বিল উত্তোলন করেছেন বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে এবং ভেঙে ও ডেবে যাওয়া অংশ মেরামত করতে ঠিকাদারকে এলজিইড কর্তৃপক্ষ একাধিকাবার চিঠি দিয়েও কোন লাভ হয়নি।

চুক্তিপত্রের ঠিকাদার আব্দুল হাকিম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ইকবাল হোসে দাউদ কাজটি নিয়েছেন। তিনিই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদদের সঙ্গে যেোগাযোগ করা হলে তিনি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ কাজের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খাঁন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কবে নাগাদ বাকি কাজটি সম্পন্ন হবে এ বিষয়ে তিনি কোনো জবাব দেননি।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago