বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পটুয়াখালীতে ৫৮ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ

নিবন্ধনবিহীন বা নিবন্ধন নবায়ন না থাকা ও আনুষঙ্গিক সুবিধা না থাকাসহ বিধি বহির্ভূতভাবে কার্যক্রম চালানোর দায়ে পটুয়াখালী জেলার ৫৮টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগনির্ণয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম জেলার আটটি উপজেলা সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ও ৫১টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য ওইসব প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার ৫৮টি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ছবি: স্টার

নিবন্ধনবিহীন বা নিবন্ধন নবায়ন না থাকা ও আনুষঙ্গিক সুবিধা না থাকাসহ বিধি বহির্ভূতভাবে কার্যক্রম চালানোর দায়ে পটুয়াখালী জেলার ৫৮টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগনির্ণয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম জেলার আটটি উপজেলা সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ও ৫১টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য ওইসব প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিভিল সার্জন ডা. মো জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম জেলার আটটি উপজেলার বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে  নিবন্ধন নেই, চিকিৎসক নেই, প্রয়োজনীয় জনবল নেই ও বিধি বহির্ভূতভাবে পরিচালনার জন্য ৫৮টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ হিসেবে শনাক্ত করেন এবং এই ৫৮টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৪টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। তবে এগুলোর একটিরও নিবন্ধন নেই, নেই চিকিৎসকও। এই অবস্থায় এই ১৪টি প্রতিষ্ঠানকেই সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— ছোয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাহিদ মেডিকেল হল, নাগরিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার,  রাঙ্গাবালী-চরমোন্তাজ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিয়াম মেডিকেল হল, আফরোজা মেডিকেল হল, মামুন মেডিকেল হল, মা-বাবা মেডিকেল হল, মুন মেডিকেল হল, মৌডুবি মেডিকেল হল, অমিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চর মোন্তাজ ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

কলাপাড়া উপজেলায় বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ২১টি। এর মধ্যে ১৭টিই অবৈধভাবে চলছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— গ্রিন লাইভ ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিএইচএম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গ্রামীণ কল্যাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাউথ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক, নিউ বসুন্ধরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামিয়া ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুক্তি ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কুয়াকাটা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কুইক কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও পানামা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার । 

দুমকিতে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে সাতটি। কাগজপত্র ঠিক না থাকায় সবগুলো প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— দি প্যাথলজি সেন্টার, পপুলার প্যাথলজি সেন্টার, রামিম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সুরক্ষা মেডিকেল সার্ভিসেস, ফোরসাইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মেডিকেয়ার ডক্টরস চেম্বার অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

গলাচিপায় ২০টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ছয়টি নিবন্ধন ছাড়া কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে— কাটাখালী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকনিকান্দি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চরকাজল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চরবিশ্বাস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, খারিজ্জামা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও গ্রামীণ কল্যাণ আমখোলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। 

বাউফলে মোট ২৪টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নেই, চিকিৎসক নেই, লোকবল নেই। এই অবস্থায় ওই ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— নিউ লাইফ হেলথ কেয়ার, নগরের হাট ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেনশন সেন্টার, নুহা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তাহসিন গ্রিন লাইফ মেডিকেল সেন্টার, নিউ কাশীপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনকদিয়া প্যাথলজি সেন্টার।

মির্জাগঞ্জে ছয়টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে— ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইউনাইটেড ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল ল্যাব, নিউ লাইফ অ্যান্ড ক্লিনিক ও শাহজাহান জেনারেল হাসপাতাল।

পটুয়াখালী সদর উপজেলায় বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৫১টি। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— সাগরকন্যা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফ্যামিলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কেয়ার অ্যান্ড ফেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। 

দশমিনা উপজেলায় ছয়টি রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সোনার বাংলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র অ্যান্ড ডিল্যাব প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন, চিকিৎসক, লোকবল না থাকায় এটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়া রোগনির্ণয় কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, করোনার কারণে অনেকেই তাদের নিবন্ধন নবায়ন করতে পারেননি। চিকিৎসকদের উপস্থিতি না থাকায় সাময়িকভাবে এগুলো বন্ধ হয়েছে।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরিদর্শন শেষে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের টিমের সদস্যদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জেলার মোট ৫৮টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে, নিবন্ধনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করার পর এসব প্রতিষ্ঠান চালুর অনুমতি দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জেলায় মোট ১৪৯টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago