মন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষা, ৮ মাসেও সরকারি অনুদান মেলেনি ১৫০০ প্রান্তিকজনের

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বুড়ির বাজারে পথের ধারে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছেন একজন রবিদাস। ছবি: এস দিলীপ রায়

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণের আট মাস পার হলেও লালমনিরহাটের ১৫০০ সুবিধাভোগী প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মানুষ এখনো সরকারি অনুদান না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণের পরই এ অনুদানের অর্থ তাদের হাতে তুলে দেয়ার কথা ছিল।

এ বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চেক তৈরি আছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষা করছেন তারা।

জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জেলার ৫টি উপজেলা ও একটি পৌরসভার ১৫০০ জন নরসুন্দর, রবিদাস, কামার, কুমার, কুটিরশিল্পী ও হস্তশিল্পী সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে তিন দিনের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে পেশার উন্নয়নে প্রত্যেক সুবিধাভোগী প্রান্তিকজন ১৮ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পাওয়ার কথা। সরকারিভাবে এ টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়।

আদিতমারী উপজেলার ভাদাই বাজারের জুতা সেলাইয়ের কাজে নিয়োজিত প্রেমচাঁদ রবিদাস জানান, প্রশিক্ষণের পর তিনি সরকারি অনুদানের ১৮ হাজার টাকার জন্য অনেকবার সমাজসেবা কার্যালয়ে গেছেন কিন্তু আজ দেবে, কাল দেবে বলে শুধু ঘুরিয়েছে। এখন ওই অনুদানের জন্য অফিসে যাওয়া বাদ দিয়েছেন। করোনা দুর্যোগকালে সরকারি অনুদানের এই টাকাটা পেলে অনেক উপকারে আসতো বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামে জুতা সেলাইয়ের কাজে নির্ভরশীল ধনেশ্বর রবিদাস বলেন, টাকার অভাবে তারা তাদের ছোট দোকান মেরামত করতে পারছেন না। কিন্তু ৮ মাসেও সরকারি বরাদ্দের অনুদান না পেয়ে তারা হতাশ। সমাজসেবা থেকে এ টাকা পাবেন কিনা এ নিয়ে এখন প্রশ্ন তাদের।

লালমনিরহাট শহরের কলেজ রোডে নরসুন্দরের কাজ করেন মিলন চন্দ্র শীল। তিনি জানান, করোনার কারণে তাদের ব্যবসা পুরো অচল হয়ে পড়েছে। এই দুর্যোগকালে সরকারি বরাদ্দের অনুদানের টাকাটা পেলে অনেক উপকার হতো।

অনুদানের টাকার জন্য সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন বলে জানান সেলুনের কাজে নিয়োজিত রোস্তম আলী।

একই অভিযোগ আর হতাশা শোনা গেল আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর কুমারপাড়া গ্রামের কুমার ননী গোপাল পাল আর বিডিআরহাট এলাকার রবিদাস কম্যুনিটির স্বপন কুমার রবিদাসের কাছেও।

এ বিষয়ে আদিতমারী সমাজসেবা কর্মকর্তা রওশানুল মন্ডল জানান, অনুদানের চেক তৈরি আছে। শুধু সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর অনুমতি পেলে তা প্রান্তিক মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। কবে অনুমতি মিলবে- সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগির মন্ত্রী মহোদয় আনুষ্ঠানিকভাবে এসব চেক হস্তান্তর করবেন।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুর-ই-জান্নাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠির পেশাগত উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দের অনুদান প্রদানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কিছু অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করেই শিগগির সুবিধাভোগীদের হাতে সরকারি অনুদানের চেক আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি। এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেননি।

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

6h ago