শ্রীপুরে সরকারি জলাশয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকায় সরকারি জলাশয়ে (বাইর বিলে) বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই বিলের আশপাশে কমপক্ষে দেড়শ কৃষক জমির ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীরা গত কয়েক বছর যাবত ‘বাই বিলে’ বাঁধ দেওয়ায় কৃষকরা এ বছরও ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জোরপূর্বক বাঁধ দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় কৃষকরা শ্রীপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন।
ওই অভিযোগে জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের তপন মিয়, ফালান, চান মিয়া, আ: ছামাদ, আহাম্মদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। চলতি বছরেও একইভাবে ওই জলাশয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা।
তবে, কোনো প্রতিকার না পেয়ে কৃষকেরা গত ১৯ জুলাই গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে উল্লেখিত অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও শ্রীপুরের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি), কাওরাইদ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে দায়িত্বে অবহেলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. আ. করিমসহ অন্যান্যরা বলেন, ‘উল্লেখিত অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তপন এবং তার সহযোগীরা সরকারি ‘বাই বিলে’ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় স্থানীয় কৃষকেরা প্রতি মৌসুমে কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
ওই গ্রামের কৃষক আ. রহিম বলেন, ‘আমিও জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদন করতে পারছি না।’
অপর কৃষক জালাল উদ্দিন ও সাহিদ জানান, তারা দেড় একর জমিতে গত দুই বছর যাবত ফসল আবাদ করতে পারছেন না। শুষ্ক মৌসুমে বিলের বাঁধের কারণে উন্মুক্ত পানি না পাওয়ায় অনেক চাষি শাইল ধানের আবাদ করতে পারেন না। এদের মধ্যে অনেকে বর্গা চাষিও আছেন। গত বছর কমপক্ষে ৩০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনারের কাছে দেওয়া হয়। পরে তার অনুলিপি উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।
কাওরাইদ ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ‘সরকারি ‘বাই বিলে’ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় ১৫০ জন কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে প্রতিবেদন দিয়েছি। গত বছরের ২৭ জুন দেওয়া ওই প্রতিবেদনে কৃষকের জমি জলাবদ্ধ হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়।’
অভিযুক্তদের পক্ষে মো. নজরুল ইসলাম তপন বলেন, ‘সরকারি বিলে বাঁধ দেওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত জমিতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছি। যারা সরকারি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা সঠিক বলেননি।’
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments