‘মা পাঁচ মাস ধরে ভারতে আটকা, দেশে ফিরতে কাঁদছেন’
‘দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে মা ভারতে আটকা পড়ে আছেন। ফোন করলেই কান্নাকাটি করছেন দেশে ফিরবার জন্য। কবে যে সীমান্ত খুলবে, আর কবে যে মাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব—এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। মাকে ছাড়া আর ভালো লাগছে না।’
কথাগুলো বলতে গিয়ে নিজেকে সংবরণ করছিলেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামের গোলাম মোস্তফা। শুধু তার মা-ই নন, এরকম আরও অনেকে গত পাঁচ-ছয় ধরে মাস আটকা পড়ে আছেন ভারতে।
গোলাম মোস্তফা জানান, তার মা গুলনাহার বেগম গত মার্চ মাসে বিরল উপজেলার রাধিকাপুর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে যান তার অসুস্থ মাকে দেখার জন্য। কিন্তু এরই মধ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে ভারত জুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। বন্ধ হয় সীমান্ত দিয়ে যাত্রী পারাপার।
ভারতে আটকে পড়ায় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল গুলনাহার বেগমের। এরই মধ্যে কলকাতায় গিয়ে ভিসা নবায়ন করে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুদেশের যাত্রী পারাপার শুরু না হওয়ায় দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি।
দিনাজপুর শহরের কালিতলা এলাকার বাপ্পি চ্যাটার্জী জানান, তার ছোটভাই প্রান্ত চ্যাটার্জী ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করতে গেছে। মহামারিতে সেখানে ক্লাসও বন্ধ থাকলেও দেশে আসতে পারছে না। অনলাইনে যেভাবে ক্লাস হচ্ছে সেটা বাংলাদেশে থেকেও করা যেত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ভারতে লকডাউন ঘোষণার পর অন্তত আড়াই হাজার বাংলাদেশি ভারতে আটকা পড়ে আছেন। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। অন্যরা কেউ গেছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে অথবা আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে।
Comments