মরদেহ শনাক্তে ভুল, দাফনের আগ মুহূর্তে হাজির নিখোঁজ ব্যক্তি
পিরোজপুরে অজ্ঞাত মরদেহকে নিজের চাচা বলে শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করার পর, ফিরে এলেন নিখোঁজ চাচা লাল মিয়া। দুই জনই মানসিক ভারসাম্যহীন আর দেখতে একই রকম হলেও চাচাকে ফেরত পেয়ে মরদেহটি পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের পর আজ পিরোজপুর পৌর কবরস্থানে মরদেহটি দাফন করা হয়েছে।
পিরোজপুর সদর থানার উপপরিদর্শক মো. ফারুক হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পিরোজপুর শহরের হাসপাতাল সড়কের পাশে গতকাল পিরোজপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী ফোরকান একটি মৃতদেহ দেখতে পান। বিষয়টি পিরোজপুর সদর থানায় জানানো হলে, পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহের ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করার পর, পিরোজপুর সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সোহেল নামে এক ব্যক্তি ওই মৃত ব্যক্তিকে তার নিখোঁজ চাচা লাল মিয়া হিসেবে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন জানান, ময়না তদন্ত শেষে সোহেল ও তার স্বজনেরা মরদেহটি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। বুধবার রাত ৯টায় জানাজা হওয়ার কথা ছিল। শোকাবহ পরিবেশের মধ্যেই সন্ধ্যার পর বাড়িতে উপস্থিত হন তিন দিন ধরে নিখোঁজ লাল মিয়া।
এরপর, তাৎক্ষণিকভাবে সোহেল বিষয়টি সদর থানায় জানালে, পুলিশ ওই মরদেহটি আবার থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সহায়তায় হাতের ছাপ নিয়ে মরদেহটির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চালানো হয়। তবে, মৃত ব্যক্তির আঙুলের ছাপের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের কারও সঙ্গে না মেলায় তাকে এই পদ্ধতিতে শনাক্ত করা যায়নি।
পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তি ও জীবিত লাল মিয়ার মধ্যে বাহ্যিক সাদৃশ্য থাকায় লাল মিয়ার স্বজনদের মরদেহ শনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল।
সোহেল জানান, তার চাচা লাল মিয়া মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। তবে, কয়েকদিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তার চাচার চেহারার মিল থাকায়, তারা মরদেহ শনাক্তে ভুল করেছেন।
মরদেহ দাফনের আগে তার চাচা ফিরে না এলে চাচা বেঁচে আছেন কিনা, তারা তা জানতে পারতেন না বলে জানান সোহেল।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন জানান, অজ্ঞাত মরদেহটি আজ বুধবার আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম এর মাধ্যমে পিরোজপুর পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মরদেহ শনাক্তের জন্য সব থানায় জানানো হয়েছে এবং স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।
মৃত ব্যক্তি পরিচয় উদঘাটনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চেষ্টা চলছে বলে জানান পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল।
Comments