ন্যায্য মজুরিবঞ্চিত বুড়িমারীর পাথরভাঙা শ্রমিকরা

দিনভর পাথরভাঙার কাজ করে চার শ টাকা মজুরি পান নজরুল ইসলাম। এর মধ্যে দুপুরে খেতে এক শ টাকা খরচ হয়ে যায়। দিন শেষে ঘরে ফিরতে হয় তিন শ টাকা হাতে। একই অবস্থা লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের ৩০ হাজারের বেশি শ্রমিকের।
নজরুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় চার হাজার পাথরভাঙা মেশিন (স্টোন ক্র্যাশার মেশিন) আছে। প্রতিটি মেশিনে ছয় থেকে ১০ জন শ্রমিক দলবদ্ধ হয়ে পাথরভাঙার কাজ করেন। পাথরভাঙার মতো কঠোর পরিশ্রম করে চার শ টাকা অনেক কম। এই টাকায় সংসার চলে না। অন্য কাজের সুযোগও নেই।’
নজরুলের সহকর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পাথরের গুঁড়া থেকে মরণব্যাধি সিলিকোসিস রোগের সৃষ্টি হয়। এ রোগে অনেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ অঞ্চলে অন্য কোনো কাজের সুযোগ না থাকায় কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা যদি ন্যায্য মজুরি দাবি করি, তাহলে মহাজন আমাদের ছাঁটাই করবে। কাজ হারানোর ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারি না।’
পাথরভাঙা শ্রমিকদের দলনেতা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে শ্রমিকদের প্রতিদিন চার শ এবং মেশিন অপারেটরদের পাঁচ শ টাকা দেওয়া হয়। অথচ প্রতিটি শ্রমিকের বেতন হওয়া উচিত প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় শ টাকা। আমরা মালিকদের কাছে অনেকবার ন্যায্য মজুরির জন্য আবেদন করেছি কিন্তু ফল আসেনি। শ্রমিকদের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও হয়নি।’
ক্র্যাশার মেশিনের মালিক জমশের আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অন্য মালিকদের সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরির বিষয়ে আলাপ করা হবে।’
লালমনিরহাট জেলা সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শিগগির আমরা মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কার্যকর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
Comments