মেঘনায় উদ্ধারকারী জাহাজডুবি: ২ নাবিক নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার ৪
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া মালবাহী লাইটার জাহাজ উদ্ধার করতে এসে প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ে উদ্ধারকারী জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাত দেড়টার দিকে উপজেলার ভাসানচর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই জাহাজের দুই নাবিক নিখোঁজ আছেন। চার জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার বিশ্বজিৎ বড়ুয়া এ সকল তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬ টা) নিখোঁজ দুই নাবিকের কোন সন্ধান মেলেনি।
নিখোঁজ দুই নাবিক হচ্ছেন জাহাজটির মাস্টার আবুল কালাম (৫৫) ও বাবুর্চি আবুল হাশেম (৫০)।
কোস্টগার্ড হাতিয়া স্টেশন ও ডুবে যাওয়া জাহাজ কোম্পানি মেসার্স লাবণী এন্টারপ্রাইজ চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে দেড় হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এম.টি শবনম-৩ একটি লাইটার জাহাজ ঢাকা যাওয়ার পথে হাতিয়ার ভাসানচর এলাকায় বিকল হয়ে যায়।
মেসার্স লাবণী এন্টারপ্রাইজের জাহাজ চালক রাশেদ উদ্দিন বলেন, ‘আমার কোম্পানির উদ্ধারকারী জাহাজ লাবণী পাওয়ার-৩ ভাসানচরে অচল হয়ে পড়ে থাকা শবনম-৩ লাইটার জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ওই জাহাজে একজন মাষ্টার একজন ইঞ্জিন চালক একজন বাবুর্চি ও তিন জন লস্কর ছিলেন। জাহাজটি ভাসানচর পৌঁছে বিকল হওয়া জাহাজটি টেনে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রাতেই যাত্রা করে। কিন্তু, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও আমাবস্যার টানে নদীতে প্রবল স্রোত এবং প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে উদ্ধারকারী জাহাজের দুইটি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যায়। এ সময় চালক জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। রাত দেড়টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজটি মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মাঝামাঝি এলাকায় ডুবে যায়।’
‘এ সময় জাহাজের ৬ নাবিকের মধ্যে ৪ জন পানিতে ভাসতে থাকেন। তাদেরকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হাতিয়া কোষ্টগার্ড নদীতে অভিযান চালিয়ে বাংলাবাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের হাতিয়া কোষ্টগার্ড ষ্টেশনে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়,’ বলেন তিনি।
কোস্টগার্ড হাতিয়া ষ্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট বিশ্বজিৎ বড়ুয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উদ্ধারকারী জাহাজডুবির খবর পেয়ে আজ ভাসানচরে ডুবে যাওয়া জাহাজের ছয় নাবিকের মধ্যে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজন এখনো নিখোঁজ আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিখোঁজ দুই নাবিককে উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ড ও পুলিশের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। তবে নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ ও স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।’
হাতিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘উদ্ধারকারী জাহাজডুবির ঘটনায় চার নাবিককে জীবিত উদ্ধার হয়েছে। তারা হচ্ছেন- ইঞ্জিন চালক আবদুল মান্নান, লস্কর মো. রাশেদ, মো. হানিফ ও মো. তসলিম। উদ্ধার হওয়া নাবিকরা সুস্থ আছেন।’
Comments