পঞ্চগড়ে লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা

পঞ্চগড় সদর উপজেলার মুহুরিজোত এলাকার একটি পরিত্যক্ত চা-বাগানে একাধিক বাঘ বিচরণ করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বিগত প্রায় তিন মাস ধরে এই বাঘগুলো চা-বাগানসহ লোকালয়ে বিচরণ করছে বলে তাদের ধারণা।
বাঘের পায়ের ছাপ। ছবি: স্টার

পঞ্চগড় সদর উপজেলার মুহুরিজোত এলাকার একটি পরিত্যক্ত চা-বাগানে একাধিক বাঘ বিচরণ করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বিগত প্রায় তিন মাস ধরে এই বাঘগুলো চা-বাগানসহ লোকালয়ে বিচরণ করছে বলে তাদের ধারণা।

গত ১৯ আগস্ট বিকেলে ওই চা-বাগানের ভেতর দিয়ে স্থানীয় এক কৃষক গরু নিয়ে যাওয়ার সময় বাঘের আক্রমণে তার একটি গরু মারা যাওয়ার পর থেকে এলাকার মানেুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায়ই দুটি চিতাবাঘকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।

চিতাবাঘের বিচরণকে কেন্দ্র করে মুহুরিজোত, উষাপাড়া, বাদিয়াগছ, সাহেবীজোত এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে, উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার সঙ্গে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছে। বাঘের পায়ের ছাপ দেখে জীবিত অবস্থায় চিতাবাঘ ধরার পরিকল্পনা করেছে বনবিভাগের কর্মকর্তারা।

গতকাল বিকেলে দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফ হোসেন পুলিশসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিত্যক্ত ওই বাগানটিতে গত ১৯ আগস্ট ‘বাঘ গরু মেরে ফেলেছে’, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে পরদিন সকাল থেকে হাজারো উৎসুক মানুষ ওই চা-বাগান এলাকায় ভিড় করে।

পরিত্যক্ত চা-বাগান। ছবি: স্টার

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার মুহুরিজোত এলাকার চার একর আয়তনের চা-বাগানটির মালিকানা নিয়ে আব্দুল জব্বার ও রমজান আলীর মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে প্রায় দুই বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এতে পরিচর্যার অভাব ও চা-পাতা সংগ্রহ না করায় চায়ের গাছ বড় হয়ে অন্যান্য গাছপালাসহ জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। প্রায় তিন মাস ধরে ওই চা-বাগানের আশপাশে মাঝেমধ্যেই বাঘ দেখা যাচ্ছে। দিনে বাগানে অবস্থান করলেও রাতে লোকালয়ে বিচরণ করে বলে জানান এলাকাবাসী।

উষাপাড়া এলাকার আবুল কাসেম (৬০) জানান, ১৯ আগস্ট বিকেলে চা-বাগানের ভেতর দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় তার একটি গরু বাঘের আক্রমণে মারা যায়। পরে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হলে গভীর রাতে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন থাকার পাশাপাশি নিজ বাড়িতে অবস্থানের জন্য মাইকিং করা হয়।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পরিত্যক্ত চা-বাগানটিতে একাধিক চিতাবাঘ অবস্থান করছে বলে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জেনেছি। গতকাল আমরা এলাকাটি রেকি করেছি এবং বাঘের পায়ের চিহ্নও দেখতে পেয়েছি।’

বাঘকে জীবিত অবস্থায় ধরতে ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে ট্রাংকুলাইজার গানসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী একটি দল পঞ্চগড়ে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। বাঘের পায়ের ছাপসহ এলাকায় বাঘ আছে এমন কিছু আলামত পাওয়া গেছে বলে বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।’

এলাকায় ভিড় না করে বন বিভাগকে তাদের কাজ সঠিকভাবে করার সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তাদেরকে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের অনুরোধ করেন ইউএনও।

Comments

The Daily Star  | English

What is seat-sharing and why as a voter you should know about it

In the lead-up to the national election on January 7, 2024, parties that have committed to participating in the polls have put forth their nominees

1h ago