বন্যার পানিতে ধসে যাওয়া রাস্তার ওপর

নিজ উদ্যোগে ৯টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন তিস্তাপাড়বাসী

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তাপাড়ের চারটি গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় নিজেদের নিজ উদ্যোগে নয়টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এসব বাঁশের সাঁকোগুলো ১০০ থেকে ১৫০ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ। এগুলো নির্মাণে গ্রামবাসীদের কেউ দিয়েছেন বাঁশ, আবার কেউ দিয়েছেন নগদ অর্থ।
নিজ উদ্যোগে সাঁকো নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তাপাড়ের চারটি গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় নিজেদের নিজ উদ্যোগে নয়টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এসব বাঁশের সাঁকোগুলো ১০০ থেকে ১৫০ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ। এগুলো নির্মাণে গ্রামবাসীদের কেউ দিয়েছেন বাঁশ, আবার কেউ দিয়েছেন নগদ অর্থ।

গত জুন থেকে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্যার কবলে পড়েছেন তিস্তার বাম তীরের লালমনিরহাট জেলার মানুষ। বন্যার পানিতে ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্রামের রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

বিভিন্ন এলাকার বন্যার পানিতে রাস্তা ধসে যাওয়ায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মূল ভুখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এসব গ্রামের মানুষদের পানিতে ভিজে পারাপার করতে হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে তাদের আলাদা শুকনো কাপড় সঙ্গে নিয়ে মূল ভুখণ্ডে গিয়ে ভেজা কাপড় পরিবর্তন করে গন্তব্যে যেতে হতো।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ হলেও নষ্ট হওয়া এসব গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তাই নিজেদের উদ্যোগেই গ্রামবাসীরা কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মিলন বাজার, রুদ্বেশ্বর, বাগেরহাট ও ইচলি গ্রামে ধসে যাওয়া রাস্তার ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কোনো রকমে চলাচল করছেন।

মিলন বাজার গ্রামের কৃষক সফিয়ার রহমান (৫৬) বলেন, ‘বন্যার পানিতে রাস্তা ধসে যাওয়ায় আমরা চলাচলে চরম কষ্টে পড়েছিলাম। স্থানীয় প্রশাসন রাস্তাটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় গ্রামবাসীরা মিলে চাঁদা দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। এখন শুধু বাইসাকেল ও রিকশা চলতে পারে সাঁকোর ওপর দিয়ে। কিন্তু, ভারী কোনো যান চলছে না। তাই আমাদেরকে কৃষিপণ্য বাজারে নিতে চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।’

রুদ্রেশ্বর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৬০) বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমাদের গ্রামের রাস্তার তিনটি অংশে ধসে গেছে। কিন্তু, তা মেরামত করার কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। এসব বাঁশের সাঁকো দিয়ে আমরা কোনোরকমে চলাচল করলেও মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারছি না।’

বাগেরহাট গ্রামের কৃষক আরমান আলী (৫৫) জানান, নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে আপাতত চলাচল করছেন। কিন্তু, এসব ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত মেরামত করে স্থায়ী সমাধান করা প্রয়োজন। এসব বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা যেকোনো সময় নিচে পড়ে গিয়ে আহত হতে পারেন বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

ইচলি গ্রামের কৃষক জমশের আলী মুন্সি (৬৫) বলেন, ‘আমরা নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছি। তবে, এটা তো অস্থায়ী সমাধান।’ এসব ধসে যাওয়া রাস্তা দ্রুত সংস্কার এবং সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বন্যায় ধসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এসব গ্রামীণ অবকাঠামোর তালিকা করে, তা মেরামত ও সংস্কারের জন্য প্রকল্পের তালিকা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

53m ago