রাজশাহীতে বাতাসে নয়, নর্দমায় মিলছে টাকা

রাজশাহী শহরের একটি নর্দমায় ফেলে দেওয়া টাকা পাওয়া গেছে। এক শ, পাঁচ শ, এক হাজার টাকার নোটও রয়েছে তার মধ্যে। শুধু টাকা নয়, প্রাইজবন্ডও পাওয়া গেছে নর্দমাটিতে।
নর্দমা থেকে টাকা তুলে দেখাচ্ছেন এক যুবক। ছবি: স্টার

রাজশাহী শহরের একটি নর্দমায় ফেলে দেওয়া টাকা পাওয়া গেছে। এক শ, পাঁচ শ, এক হাজার টাকার নোটও রয়েছে তার মধ্যে। শুধু টাকা নয়, প্রাইজবন্ডও পাওয়া গেছে নর্দমাটিতে।

রাজশাহী রেল স্টেশনের পূর্ব দিকে রেলওয়ে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশ দিয়ে যে নর্দমা বয়ে গেছে সেখানেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে ও বোয়ালিয়া থানার পুলিশ।

গতকাল সারাদিনে অন্তত অর্ধশতাধিক স্থানীয় মানুষকে নর্দমার নোংরা পানিতে নেমে টাকা হাতরে তুলে আনতে দেখা যায়। যত মানুষ টাকা তুলতে নর্দমায় নেমেছেন তার চেয়েও বেশি মানুষ ভিড় জমিয়ে এই ঘটনা দেখেছেন।

বিকেল তিনটার দিকে হলুদ টি-শার্ট আর লুঙ্গি পরা একজন যুবক নর্দমা হাতরে পাঁচশ টাকার একটা নোট খুঁজে পেতেই সমস্বরে সবাই হই হই করে ওঠেন। তিনি জানান, আধা ঘণ্টা ধরে খুঁজে তিনি দুটো পাঁচ শ ও একটি একশ টাকার নোট পেয়েছেন। তবে সকালের দিকে যারা তুলতে পেরেছে তারা অনেক বেশি টাকা পেয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

রেলওয়ের একজন নিরাপত্তা রক্ষী জানান, তিনি লোকজনের কাছে ১০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা পর্যন্ত শুনেছেন।

বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছে। কিন্তু ঘটনাটি রেলওয়ে পুলিশের আওতাধীন বলে তারা আর তলিয়ে দেখেননি।

একইভাবে ঘটনাটি এড়িয়ে গেছেন রেলওয়ে পুলিশও। রেলওয়ে পুলিশের ওসি শাহ কামাল বলেছেন, নর্দমার অবস্থান রেলওয়ের সীমানার বাহিরে। তারা বিষয়টি জানেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেননি।

টাকা আর প্রাইজবন্ডের সঙ্গে সেখানে পাওয়া গেছে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের টাকার হিসাব, তাদের কল্যাণ তহবিলের কাগজপত্র ও ভাউচার। কাগজগুলো ২০১১ ও তার আশপাশের বছরের।

যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক বলেন, তাদের কার্যালয়ের ১০-১২ বছর আগের পুরনো কাগজে পোকা লেগেছিল। সেগুলো না পুড়িয়ে ভুল করে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সেখানে টাকা কিভাবে এলো সে সম্পর্কে অবশ্য কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

তবে তিনি একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, যেটার সঙ্গে টাকার সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে।

বছর তিনেক আগে বিপুল নামের গ্রুপের একজন কর্মচারী তার কাছে গচ্ছিত একজন বাস মালিকের প্রায় আড়াই লাখ টাকা হারিয়ে ফেলেন। তিনি গ্রুপের কার্যালয়ে তার ডেস্কের ড্রয়ারে টাকাগুলো রেখেছিলেন, পরে মালিককে টাকা দেবার সময় আর পাননি বলে জানিয়েছিলেন। বিপুল এখনো অল্প অল্প করে সেই হারানো টাকা তার বেতনের একটি অংশ থেকে শোধ করে চলেছেন। গ্রুপের পক্ষ থেকে বিপুলকে এক লক্ষ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হারানো টাকার হদিস কখনো মেলেনি।

‘আমাদের ধারণা টাকা যে সরিয়েছিল সে টাকাটি কাগজের স্তূপেই লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু আমাদের কার্যালয় সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকায় টাকাগুলো নিয়ে বের হতে পারেনি। কাগজগুলো যখন ড্রেনে ফেলা হয়েছে ওই টাকাই হয়ত স্থানীয়রা কুড়িয়ে নিচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Yunus-led interim govt takes charge

2 months of interim govt: Hopes still persist

The interim government had taken oath two months ago with overwhelming public support and amid almost equally unrealistic expectations.

1h ago