প্রার্থীতা বাতিলের ক্ষমতা না থাকলে

নির্বাচন কমিশন নখ-দন্তহীন বাঘ নয়, বিড়ালে পরিণত হবে: মাহবুব তালুকদার

Mahbub Talukder
মাহবুব তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন সভার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনটি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ‌‍‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি লিখেন, ‘আমি সবিস্ময়ে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ইতোপূর্বে “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২” রহিত করে “গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০ বিল”-এর খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতে, এই প্রস্তাবে ১১টি মৌলিক ও পদ্ধতিগত বিধান বাদ দিয়ে খসড়াটি সেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি মনে করেন, ‘এতে সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, আরপিও বা “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২”-এর ৯১ই ধারায় কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সরাসরি ক্ষমতা, যা নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত ছিল, তার বিলোপ সাধন। এই ধারাটি সব রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে আরপিওতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল।’

‘রকিবউদ্দীন কমিশন এটি বাতিলের উদ্যোগ নিয়ে চরম সমালোচনার মধ্যে পড়ে এবং পরে ওই উদ্যোগ থেকে সরে আসে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রার্থিতা সরাসরি বাতিলের একক ক্ষমতা থেকে সরে আসা নির্বাচন কমিশনের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। এতে নির্বাচন কমিশন নখ-দন্তহীন বাঘ নয়, বিড়ালে পরিণত হবে।’

‘আমি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার মতে, প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা এককভাবে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকা আবশ্যক,’ যোগ করেন মাহবুব তালুকদার।

চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আজ (২৪ আগস্ট) অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের ৬৯তম সভায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে। এই খসড়ায় “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২” রহিতপূর্বক সংশোধনসহ “গণপ্রতিনিধিত্ব আইন, ২০২০” প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।’

তিনি এই উদ্যোগের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে বলেন, ‘১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের তৃতীয় অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২” প্রণয়ন ও জারি করেন। এটি একটি ঐতিহাসিক আইনগত দলিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনন্য স্মারক। কী কারণে বা কোন যুক্তিতে এই পরিবর্তন প্রয়োজন, তা আমার বোধগম্য নয়।’

এছাড়াও, ‘নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা আইনের যে সংস্কারের যে প্রস্তাব করেছে, আমি তার সঙ্গেও একমত নই,’ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন মাহবুব তালুকদার।

বলেন, ‘কেবল নির্বাচন পরিচালনার জন্য ভিন্ন আইন হতে পারে না, তা সার্বজনীন হবে হবে। এতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো, মেয়াদকাল ইত্যাদি পরিবর্তন নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য নয়। বিশেষ করে, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পদ ও পদবী পরিবর্তন নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নয়। এই সংস্কার কার্যক্রম নিতান্তই স্থানীয় সরকারের বিষয়।’

এমন অবস্থায় তিনি উল্লিখিত তিনটি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন বলেও চিঠিতে জানান মাহবুব তালুকদার।

Comments

The Daily Star  | English
rohingya-migration

Persecuted by Arakan Army, Rohingyas fleeing to Bangladesh

Amid escalating violence in Myanmar’s Rakhine State, Rohingyas are trespassing into Bangladesh every day, crossing the border allegedly to escape the brutality of Myanmar’s rebel group, the Arakan Army (AA).

47m ago