‘আরপিওর অংশবিশেষ নিয়ে পৃথক আইন প্রণয়ন হঠকারি সিদ্ধান্ত’
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ -এর ‘চ্যাপ্টার সিক্স এ’-এর বিভিন্ন আর্টিকেল কেটে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুব তালুকদার।
আজ বুধবার তিনি সেই চিঠিতে বলেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরোধীতা করি। আরপিও বা “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২”-এর অংশবিশেষ নিয়ে পৃথকভাবে আইন প্রণয়ন হঠকারি সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পূর্বেও বলেছি, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২” একটি ঐতিহাসিক আইনগত দলিল, যা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার অনন্য স্মারক। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব গৃহীত হলে “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২”-এর অঙ্গহানী ঘটবে, যাতে একে বিকলাঙ্গ মনে হবে।”
‘প্রস্তাবিত “রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০”-এর প্রারম্ভিক অংশে “সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন” ইত্যাদি পরিবর্তন করার বিষয়ে আমি একমত নই। এতে সজ্ঞা পরিবর্তন করে নতুন যে পদ-পদবি প্রস্তাব করা হয়েছে, তা আমার কাছে অনাবশ্যক মনে হয় ‘
তার মতে, ‘রাজনৈতিক দলগুলো ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রাপ্ত যে ৫০টি মতামত পাওয়া গেছে, তাতে এসব পদ-পদবি পরিবর্তনের বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। কী কারণে বা কোন যুক্তিতে এই পরিবর্তন প্রয়োজন, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে “আরপিও, ৭২”-এর সংশোধন করা যেতে পারে, যা আগেও করা হয়েছে।’
‘আমি মনে করি, আইনের পরিবর্তন আইন কমিশনের কাছে ন্যস্ত থাকাই সমীচীন,’ যোগ করেন তিনি।
‘প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, আজকের সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের ৬৩তম সভার সিদ্ধান্তের আলোকে “রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০”এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়। এই আইন সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনায় নির্বাচন কমিশনে নানরূপ মতদ্বৈধতা ছিল। আইনটি মতামত যাচাইয়ের আগে অধিকতর যাচাই-বাছাই ও এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনে আরও আলোচনার প্রয়োজন ছিল।’
‘দেশের অন্যতম বৃহৎ দুইটি রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য দলও এই আইন প্রণয়নের বিরোধীতা করেছে’ উল্লেখ করে তিনি চিঠিতে আরও বলেন, ‘বর্ণিত অবস্থায়, “রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০” সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করে আমি “নোট অব ডিসেন্ট” দিয়েছি।’
Comments